eaibanglai
Homeএই বাংলায়প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির উদ্যোগে বোলপুরে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির

প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির উদ্যোগে বোলপুরে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বোলপুরঃ- কারও কাছে ব্যবসায় লাভটা মুখ্য হলেও কেউ কেউ সমাজের প্রতি নিজেদের দায়িত্ববোধটা ভোলেনা। এরকমই একটি সংস্থা হলো বোলপুরের নতুন পল্লীতে গড়ে ওঠা আর.এন.টেগোর ট্রেনিং অ্যাকাডেমি। বেকার যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে সমাজের প্রতি নিজেদের দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়ে ইতিমধ্যে এলাকাবাসীদের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। গত ১০ ই মে আবার তারই এক টুকরো নমুনা দেখল বোলপুরবাসী।

গরমের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে দ্যাখা দিয়েছে রক্তের ঘাটতি। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রুগীরা পর্যন্ত ঠিকমত রক্ত পাচ্ছেনা। রক্তের জন্য প্রকৃত অর্থেই শুরু হয়েছে হাহাকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। তাদের পথ অনুসরণ করে বোলপুরে এগিয়ে এল সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি।

গত ১০ ই মে সংশ্লিষ্ট ট্রেনিং অ্যাকাডেমির উদ্যোগে এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলাণ্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম ও বীরভূম ভলাণ্টারি ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়শনের যৌথ সহযোগিতায় বোলপুরে নিজেদের প্রশিক্ষণ প্রাঙ্গনে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়। মূলত সংস্থার ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্ত দিতে এগিয়ে আসে। তার বাইরেও বেশ কয়েকজন ডোনার ছিলেন। শিবির থেকে মোট ৪২ ইউনিট রক্ত সংগৃহীত হয়। যদিও সংখ্যাটা আরও বেশি ছিল। নির্ধারিত যোগ্যতামান অতিক্রম করতে না পারার জন্য বেশ কয়েকজন ইচ্ছে থাকলেও রক্তদান করতে পারেনি। এরজন্য তাদের যথেষ্ট হতাশ লাগছিল। রক্তদাতাদের মধ্যে একটা বড় অংশ ছিল ছাত্রী। সংগৃহীত রক্ত ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়শনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে প্রত্যেক ডোনারকে দেওয়া হয় একটি করে মানপত্র।

মামণি, জুয়েল, সোমনাথ, রিক্তা, পূজা, নয়নমণি, মিতালিরা এই প্রথমবারের জন্য রক্তদান করল। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে একটা অজানা ভয় ও উত্তেজনা কাজ করছিল। তারপরও তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্যই এতবড় একটা অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।

রক্তদাতাদের উৎসাহিত করার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নরুল হক, ‘প্রত্যাশা তোমার আমার সবার’ সংস্থার প্রধান কর্মকর্তা আব্দুল খালেক মল্লিক, সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ সংস্থার দুই শিক্ষক বিশ্বজিৎ দাস ও সেখ ইসমাইল এবং এপিপিএল – এর অন্যতম অ্যাসোসিয়েট মহঃ জুয়েল হক সহ অন্যান্য অ্যাসোসিয়েট এবং এলাকার বেশ কয়েকজন সমাজসেবী ও রক্ত ডোনার।

নরুল বাবু বললেন – বিজ্ঞান আমাদের অসংখ্য চাহিদা মেটাতে পারলেও এখনো রক্তের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি। একজনের রক্তদান অন্যজনের জীবনদানের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সুতরাং আমাদের প্রত্যেককে এই মহতী কাজে এগিয়ে আসতে হবে। রক্তদান করলে কোনো ক্ষতি হয়না। যেভাবে বিভিন্ন রক্তদান শিবিরে মহিলা রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ছে তাতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তার আশা মহিলারা আগামীদিনে এইক্ষেত্রে একটা বড় পরিবর্তন আনবেন। তাদের হাত ধরেই রক্তদাতার সংখ্যা অনেক বাড়বে।

সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সংস্থার শিক্ষক তথা বোলপুর শাখার কর্ণধার বিশ্বজিৎ দাস প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন – মূলত আমার প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ ও আগ্রহের জন্য এই রক্তদান শিবিরটির আয়োজন করতে পারলাম। আগামীদিনে আমাদের অন্য পরিকল্পনা আছে। আশাকরি সেদিনও আরও অনেককেই পাশে পাব। সবার মিলিত প্রচেষ্টায় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সমাজের প্রতি নিজেদের দায়বদ্ধতা আমরা বজায় রাখব।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments