সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ- বন্ধুরা, আমরা অনেকেই আমাদের সনাতন শাস্ত্র সম্পর্কে ঠিক ভাবে জানিনা, আর সেই কারণে অন্য কেউ যখন আমাদের সামনে আমাদের ধর্মকে ছোট করে সমালোচনা করে তখন আমরা তাদের মুখের উপর উপযুক্ত জবাব দিতে পারি না। আপনারা অনেকেই শিব লিঙ্গ দেখে পুরুষাঙ্গ ভেবে বসেন, কিন্তু জানেন কি এমনটা করলে আপনারা শাস্তি পাবেন। কারণ শিব লিঙ্গ আসলে পুরুষাঙ্গ নয়। এমনকি আমাদের সনাতন শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিবলিঙ্গকে সাধারণ পুরুষাঙ্গ ভাবলে কি শাস্তি হতে পারে?
ভগবান রাম চন্দ্রের পূর্বপুরুষ ছিলেন রাজা ইক্ষ্বাকু, জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি শিব ভক্ত হয়ে উঠে ছিলেন, কিন্তু তিনি তার জীবনে বহু আগে একটি মারাত্মক পাপ করেছিলেন, সেটা হলো তিনি শিবলিঙ্গ কে পুরুষের পুরুষাঙ্গ বলে নিন্দা করেছিলেন ফলে মৃত্যুর পর পূর্বকৃত পাপের জন্য তার জননাঙ্গের রোগ হয় এবং তিনি জিভা ও নাকহীন হয়ে যান।
মহেশ্বর ইক্ষ্বাকুকে বলেছিলেন যে,“ তুমি দিন দিন ক্ষীণ হইয়া অষ্ট দিন মাত্র আমার পূজা করিয়াছ, কিন্তু পূর্বে শিবলিঙ্গকে ‘শিশ্নের অগ্রভাগ’ এই বলিয়া আমার নিন্দা করিয়াছ, সেই পাপযোগ দ্বারা তোমার শিশ্নের অগ্রভাগ চক্র ও বিবর হইবে এবং তোমার জিহ্বা ও নাসিকাদি থাকিবে না।” (পদ্মপুরাণের পাতালখন্ডের অধ্যায় ৬৬, শ্লোক ১৬৮-১৮৬-তে আছে)
তাই ভুলেও শিবলিঙ্গকে পুরুষাঙ্গ ভেবে ভুল করে বসবেন না,সময় থাকতে সাবধান হোন! এইবার জেনে নেওয়া যাক শিবলিঙ্গ আসলে কী?
এর অর্থ আপনারা সংস্কৃত ভাষাতেই খুঁজে পাবেন। সংস্কৃত ভাষায় লিঙ্গ শব্দের অর্থ কিন্তু পুরুষাঙ্গ নয়, সেখানে পুংলিঙ্গ, স্ত্রীলিঙ্গর অর্থ পুরুষাঙ্গ বা জননাঙ্গ নয়! নারী বা পুরুষ।
তেমনি সংস্কৃতে শিব শব্দের অর্থ হলো মঙ্গল আর লিঙ্গ শব্দের অর্থ হলো প্রতীক। অর্থাৎ শিবলিঙ্গ শব্দের অর্থ হলো মঙ্গলময় প্রতীক, নিজেও জানুন এবং নিজের ধর্মের খুঁটিনাটি জানান নিজের সন্তানকেও, যাতে তারা কোন ভুল পদক্ষেপ না নেয়।