শুভ্রাচল চৌধুরী, বাঁকুড়া:– একটা প্রচন্ড ঝাঁকুনি, তারপরেই বেহুশ। হুশ ফিরতেই দেখেন ট্রেনের ফ্যানে পা আটকে গিয়েছে, অনেকজন চাপা পড়ে গেছে, পাশের সহযাত্রীটি মৃত। এমনই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিলেন বাঁকুড়া জেলার ছাতনার অন্তর্গত আররা গ্রাম পঞ্চায়েতের আড়রা গ্রামের মেয়ে স্মৃতি মণ্ডল। বছর উনিশের স্মৃতি নার্সিংয়ের ছাত্রী। তিনি বিশাখাপত্তনমে নার্সিং নিয়ে পড়াশুনা করেন। দুর্ঘটনার দিন করমন্ডল এক্সপ্রেসে বিশাখাপত্তনমে যাচ্ছিলেন তিনি।
বীভৎস ওই দুর্ঘটনার হাত থেকে কোনও রকমে রক্ষা পেয়ে গতকাল বিকেলেই বাড়ি ফেরেন স্মৃতি। রবিবার সকালে চিকিৎসার জন্য ছাতনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখান থেকে তাকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। এদিন হাসপাতালে যাওয়ার পথে সেই দুর্ঘটনার রাতের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা জানান স্মৃতি।
স্মৃতি জানা সেদিন রাতে ট্রেনে প্রচণ্ড একটা ঝাঁকুনি অনুভব করেন তিনি। এরপরই অন্ধকার নেমে আসে তার সামনে। জ্ঞান হারান তিনি। কতক্ষণ সেই অবস্থায় ছিলেন জানেন না। তবে জ্ঞান ফিরতেই বুঝতে পারেন তার পা ট্রেনের ফ্যানে আটকে রয়েছে। হাত দুটি অবশ। নড়চড়া করার ক্ষমতা নেই। পাশাপাশি তিনি লক্ষ্য করেন তার মতো অনেকেই চাপা পড়ে রেয়ছেন এবং তার সহযাত্রীটি মৃত। জীবন ফিরে পেলেও স্মৃতির আক্ষেপ তিনি যদি সেই সময় হাত পা নাড়ানোর মতো অবস্থায় থাকতেন তাহলে নার্সিংয়ের ছাত্রী হিসেবে হয়তো অনেকেরই প্রাণ বাঁচাতে পারতেন। যদিও স্মৃতির বাবা মায়ের কোনও আক্ষেপ নেই। মৃত্যুর মুখ থেকে মেয়ে ফিরে আসায় খুশি তারা। মেয়ে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে আসুক, এখন শুধু এইটুকুই কামনা তাদের।