জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- হাতে দামি স্মার্টফোন, ততোধিক দামি পোশাক পরিধান করে, গায়ে আধুনিকতার নামাবলী চাপিয়ে বহিরঙ্গে আধুনিক হলেও অন্তরঙ্গে আমাদের একটা বড় অংশ আজও সেই আদিমযুগে অবস্থান করছে। বিভিন্ন অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার আমাদের মনকে ঘিরে ধরে আছে। বিষধর সাপে কামড়ালে আমরা হাসপাতালের পরিবর্তে ছুটে যায় ওঝার কাছে। ওষুধের পরিবর্তে বিশ্বাস রাখি ঝাড়ফুঁক বা ঠাকুরতলার মৃত্তিকার উপর। ভাগ্য ফেরানোর জন্য হাতের দশটা আঙুলে শোভা পায় বিশটা দামি পাথর যুক্ত আংটি, গলায় ঝোলে মাদুলি অথবা বাহুতে বাঁধা থাকে বিভিন্ন গাছের শিকড়। এইসব মানুষের মন থেকে অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার দূর করে তাদের মনে বিজ্ঞান চেতনা জাগ্রত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে রাজ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞান মঞ্চ।
এই বিষয়ে গত প্রায় তিন দশক ধরে গুসকরা শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের গুসকরা শাখা। গত দশ বছর ধরে দেশের ভবিষ্যত নাগরিক তথা জাতির মেরুদণ্ড ছাত্রসমাজের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের মনে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে বিজ্ঞান সচেতনতা।
ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য বিশ্ব পরিবেশ দিবস অর্থাৎ ৫ ই জুন সংস্থার পক্ষ থেকে অঙ্কন ও ক্যুইজের উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার শেষে প্রতি বিভাগের বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার।
এর আগে শহরবাসীদের সঙ্গে সঙ্গে শহরে আগত মানুষদের সচেতন করার জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে একটি সচেতনতামূলক পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। হাতে বিভিন্ন স্লোগান সমৃদ্ধ প্লাকার্ড নিয়ে শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে।
বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিষ্ণুপদ সিনহা, ডা. দীপঙ্কর বসু, তপন মাজি, বিল্বেশ্বর ভট্টাচার্য, সুশোভন কর্মকার, মদনমোহন ঘোষ, ভুবন ঘোষ সহ অনেক সাধারণ মানুষ।
সংস্থার গুসকরা শাখার সম্পাদক অমল দাস বললেন – আমাদের লক্ষ্য সমাজ থেকে বিভিন্ন কুসংস্কার দূর করা এবং প্লাস্টিক তথা দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা। তিনি আরও বললেন – আগামী দিনে আমরা আমাদের কর্মসূচি গুসকরা শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। এরজন্য তিনি সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।