জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- ‘মার ঝাড়ু মার ঝাড়ু মেরে ঝেটিয়ে বিদেয় কর/ ছিঃ ছিঃ এত্তা জঞ্জাল’ – জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় সঙ্গীতটির উদ্দেশ্য যাইহোক না কেন কোনো গৃহস্থই নিজের বাড়িতে জঞ্জাল পচ্ছন্দ করেনা। সেগুলো সবসময়ই ঝেটিয়ে বাইরে ফেলে দিতে চায়। বাড়িকে পরিচ্ছন্ন রাখতে চায়।
কিন্তু পেশায় শিক্ষক গুসকরা শিরিষতলা সংলগ্ন তপন দাস সম্পূর্ণ অন্য ধাঁচের মানুষ। ফেলে দেওয়া আবর্জনা বা বাতিল সব জিনিস থেকেই নিজের হাতের জাদুতে ফলিয়ে তুলছেন একের পর সোনা। তার বাড়িতে গেলেই তার সৃষ্টির অসাধারণ সব নমুনা দেখতে পাওয়া যাবে।
রথযাত্রার প্রাক্কালে ফেলে দেওয়া পুরনো খবরের কাগজ, কার্ডবোর্ড, সুতলির দড়ি, সুতো, রঙিন কাগজ, রং, আঠা এবং সঙ্গে নিজের কঠিন পরিশ্রমকে পাথেয় করে নিজের হাতে তৈরি করে ফেললেন পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের আদলে কাগজের এক জগন্নাথ মন্দির। তার তৈরি মন্দিরটিকে দেখে প্রত্যেকেই মুগ্ধ হবে।
তপন বাবু বললেন – অল্প বয়স থেকেই পড়াশোনার ফাঁকে বাতিল জিনিস থেকেই একের পর এক বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করতাম। মা, বাবা সহ পরিবারের প্রত্যেক সদস্য আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। রথের আগে হঠাৎ পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির তৈরির ভাবনা মাথায় এলো। তাই এই চেষ্টা। আশাকরি সবার ভাল লাগবে।
তপন বাবুর প্রসঙ্গ তুলতে আসানসোলের বহুমুখী প্রতিভাধর শিল্পী ধনঞ্জয় মুখার্জ্জী বললেন – শিল্প এমন একটা বিষয় যার ভাবনা কেবলমাত্র শিল্পীর মন থেকে, হৃদয় থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসে। তপন বাবুর তৈরি যেসব জিনিসগুলি দেখলাম এককথায় অসাধারণ। একজন জাত শিল্পীর পক্ষেই ফেলে দেওয়া বাতিল জিনিস দিয়ে এইসব জিনিস তৈরি করা সম্ভব। আশাকরি বাংলার মানুষ ভবিষ্যতেও উনার অসাধারণ সৃষ্টির সাক্ষী থাকার সুযোগ পাবে।