সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থানার ভড়া গ্রামের বাবা ধর্মরাজের রথ প্রায় ৫০০ বছরের পুরানো। স্থানীয় ঘোষ পরিবার পরিচালিত সুপ্রাচীন এই রথ দেখতে প্রতিবছর জেলার নানান প্রান্ত হতে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার মতো প্রতিবছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই রথযাত্রা উৎসবের সূচনা হয়। আয়োজক ঘোষ পরিবারের সদস্য স্বরুপ ঘোষ ,বৈদ্যনাথ ঘোষ জানান, কয়েক পুরুষ আগে কাঠের রথ ছিল কিন্তু কোনো একবছর আগুন লেগে তা নষ্ট হয়ে যায়। তারপর থেকে লোহার তৈরি রথে চড়েই ধর্মরাজ ঠাকুরের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
লোহার তৈরি তিনধাপের প্রায় ২০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এই রথ সারাবছর রথতলা এলাকাতেই রাখা থাকে। রথের দিন রথের চূড়াগুলি পতাকা ও কাপড় দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়। সামনে থাকে মাটির তৈরি সারথির পূর্ণাবয়ব মূর্তি। রথের সামনে দুদিকে দড়ির বদলে দুটি লম্বা বাঁশ দিয়ে রথে টান দেওয়া হয়। পাশ্ববর্তী এলাকার শয়ে শয়ে ভক্ত আগের দিন নাপিতের কাছে নখ খুঁটে নিরামিষ আহার করে অপেক্ষা করেন রথের বাঁশে টান দেওয়ার জন্য। সোজারথের দিন মালাকারদের তৈরি ফুলের দোলায় চড়ে দুপুরে বাবা ধর্মরাজ রথতলায় আসেন। পরে রথে চেপে ভড়া ফুটবল ময়দান অবধি রথযাত্রা করেন।
সোজারথের দিন ভড়া ফুটবল মাঠে মেলা বসে। খেলনার দোকান থেকে নাগরদোলা, বেলুনওয়ালা থেকে জিলাপিওয়ালা- চলে দেদার বেচাকেনা। এইদিন রাতে ঠাকুর পুনরায় ফুলের দোলায় চড়ে ফিরে আসেন রথতলা সন্নিকটে মাসীর বাড়ীতে। রথ রয়ে যায় ফুটবল ময়দানেই। এরপর মাসীর বাড়ীতে পূজা আরতি ও ভোগ নিবেদন করা হয়।পরে উল্টোরথের দিন পুনরায় রথে চড়ে বাবা নিজের মন্দিরে(ধরমবাখুল) ফিরে যান।
মন্দিরের সেবাইত নেপাল ব্যানার্জী মহাশয় জানান, “সারাবছরই মনোবাসনা পূরনের জন্য অসংখ্য ভক্তশিষ্য বাবার মন্দিরে আসেন,বাবা ধর্মরাজ ঠাকুর সকলের মনোবাসনা পূর্ণ করেন”।