সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ- আজ বিপত্তারিণী পুজো, আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষে রথ যাত্রা থেকে উল্টো রথ পর্যন্ত তৃতীয়া থেকে নবমী তিথির মধ্যে যে কোন শনি বার ও মঙ্গল বার দিনই বিপত্তারিণী পুজা হয়। কেন এই ব্রত পালন করা হয়? মা বিপত্তারিণীর ব্রত সবাই করে বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক বিপত্তারিণী বা বিপদনাশিনী পুজোর গল্প।
পুরাণে বলা হয় যে, শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামের দুই অসুরের হাতে দেবতারা পরাজিত হয়ে হিমালয়ের কাছে গিয়ে মহামায়ার স্তব করতে থাকেন। এমন সময় দেবী পার্বতী সেই স্থান দিয়ে যাচ্ছিলেন। দেবতাদের স্তব শুনে দেবী বললেন,“ আপনারা এখানে কার স্তব করছেন?” সেই সময় দেবী পার্বতীর শরীর থেকে তারই মত দেখতে আর এক জন দেবী আবির্ভূতা হলেন, সেই নব আবির্ভূতা দেবী বললেন যে, “ এরা আমারই স্তব করছেন ।” দেবী বিপত্তারিণীই যুদ্ধে শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামের অসুরদের বধ করে ছিলেন। আর একটি পৌরাণিক কাহিনী তে বলা হয় যে, একবার দেবাদিদেব মহাদেব রহস্যচ্ছলে দেবী পার্বতীকে ‘কালী’ বলে উপহাস করেন- এই ঘটনায় দেবী ক্রুব্ধ হয়ে ওঠেন ও তপস্যার মাধ্যমে নিজের “কৃষ্ণবর্ণা” রূপ পরিত্যাগ করেন। দেবী পার্বতীর অঙ্গ থেকে সৃষ্ট হওয়া এই কৃষ্ণ বর্ণা দেবীই হলেন বিপদতারিনী।
১২ মাসে যত ব্রত আছে সেই সকল ব্রতের মধ্যে বিপত্তারিণী ব্রত শ্রেষ্ঠ। যে নারী ভক্তি সহকারে এই বিপত্তারিণী ব্রত পালন করে, দেবীর কৃপায় তার সকল বিপদ দূর হয়। সে কখনো বৈধব্য যন্ত্রণা ভোগ করে না। চিরাচরিত বা প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী দেবীর কৃপাসিক্ত লাল তাগা হাতে বাঁধেন ভক্তরা। বলা হয় যে দেবী বিপত্তারিণীর এই লাল তাগা যার হাতে থাকে বিপদ তার কিছুই করতে পারে না।