সংবাদদাতা,আসানসোলঃ-শ্রাবণ মাস হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে একটি পবিত্র মাস। শ্রাবণ মাসকে শিবের মাসও বলা হয়। শিব ভক্তরা সারা বছর ধরে এই মাসের অপেক্ষা করে থাকেন। মনে করা হয় ভগবান শিব শুধুমাত্র ভক্তির পিয়াসী অবং তিনি খুব সহজেই প্রসন্ন হন। তাঁকে এই শ্রাবণ মাসে শুধু একটু গঙ্গা জল অপর্ণ করলে তিনি খুশি হন ও ভক্তদের দুঃখ দুর্দশা দূর করে মনোবাসনা পূরণ করেন।
শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালা নিয়ে যে সকল পৌরাণিক আখ্যান প্রচলিত আছে তার মধ্যে অন্যতম সমুদ্রমন্থনের ঘটনা । পুরাণের কাহিনী অনুসারে শ্রাবণ মাসে সোমবারের দিনই দেবতা ও অসুরদের মধ্যে সমুদ্র মন্থনের ফলে সমুদ্রগর্ভ থেকে গরল বা বিষ ভরা কলসি উঠে আসে। সেই বিষ কন্ঠে ধারণ করে বিষের তেজস্ক্রিয় প্রকোপ থেকে সমস্ত প্রাণীকুলকে রক্ষা করেন দেবাদিদেব। তাই তাঁকে নীলকন্ঠও বলা হয়। তাই এই শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল বা দুধ ঢেলে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।
আর শ্রাবণ মাসে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলায় অবস্থিত বৈদ্যনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির বা বৈদ্যনাথ ধামে শিবের মাথায় জল ঢালতে প্রতি বছর দূর দূরান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পুর্ণ্যার্থীরা ছুটে যান। প্রসঙ্গত এই মন্দির ১২টি পবিত্রতম জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের অন্যতম। শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার বৈদ্যনাথ ধামে শিবের মাথায় জল ঢালতে মঙ্গলবার দুর্গাপুর থেকে দেওঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন ৪৫ জনের ভক্ত দল। শিল্পনগরীর বিধাননগর সমাজ কল্যান ডাকবোম সেবা সমিতির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে এই শ্রাবণী যাত্রার। এই ভক্তদলটির প্রথম গন্তব্য বিহারের সুলতানগঞ্জ। সেখানে গঙ্গা থেকে জল ভরে তারপর বৈদ্যনাথ ধামে শিবের মাথায় জল ঢালার উদ্দেশ্যে দেওঘর রওনা হবেন দুর্গাপুরের এই ভক্তবৃন্দ। এদিন ডাকবোম সমিতির পক্ষে বিশ্বম্ভর রাম জানান, দেওঘরের পর বাসুকিনাথ মন্দিরেও তাঁরা যাবেন জল ঢালার উদ্দেশ্যে। পাশাপাশি প্রায় ১০০০ জনের খাবারের কাঁচামাল তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। মন্দিরের আশেপাশে যত গরীব দুখী থাকবে, তাঁদের রান্না করে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে।