জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউসগ্রামঃ- একই দলের কর্মীদের একাংশ বলছে আমরা বিধায়কের অনুগামী, অপর অংশ বলছে আমরা ব্লক সভাপতির। তাহলে দলের অনুগামী কে? এলাকায় দলের পরিস্থিতি দেখে আক্ষেপ ঝরে পড়ল আউসগ্রাম -২ নং ব্লকের ভেদিয়া অঞ্চলের এক তৃণমূল কর্মীর গলায়। বাস্তবে এটাই হলো সংশ্লিষ্ট ব্লকের প্রতিটি অঞ্চলের সার্বিক চিত্র। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অস্বীকার করলেও নীচু তলার কর্মীদের কণ্ঠে এই সুর ধরা পড়ে। পরিস্থিতি এমন দলের ব্লক কমিটি পর্যন্ত গঠন করা যায়নি। বিভিন্ন অঞ্চলে হারের হাতছানি। এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীকে হারানোর গোপন খেলায় মেতে উঠেছে।
বিগত বিধানসভা ভোটে সাতটি অঞ্চল বিশিষ্ট আউসগ্রাম -২ নং ব্লকে তৃণমূল এগিয়ে পাঁচটি অঞ্চলে এবং বিজেপি দুটিতে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এগিয়ে থাকা পাঁচটির মধ্যে দুটি অঞ্চলে তৃণমূল বুথ হিসাবে পেছিয়ে আছে। বিতর্ক থাকলেও তিনটি অঞ্চল গত বিধানসভা ভোটে দলের জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আজ সেখানেও প্রশ্ন চিহ্ন। সেই বিধায়ক বনাম ব্লক সভাপতির লড়াইয়ের গল্প। ব্লক সভাপতির সৌজন্যে ‘গোপন কথাটি রইলো না গোপনে’।
এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। পরিস্থিতি তৃণমূলের পক্ষে খারাপ হয়েছে। কোটা, ভেদিয়া, উত্তর রামনগর অঞ্চলে তৃণমূল যথেষ্ট চাপে। প্রচারেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এড়াল অঞ্চলে নেতাদের বক্তব্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দলের রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতারা দিনরাত এক করে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এমনকি গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন কাউন্সিলর এবং শহর সভাপতি ও শহর যুব সভাপতিদের প্রচারে দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে বিধায়ক তো আছেন। বেশ কয়েকটি অঞ্চল তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
নিজেদের অতীত সংগঠনের উপর ভরসা করে প্রচারে নেমেছে সিপিএম। তারা মূলত ছোট ছোট বৈঠকের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে আউসগ্রামের জঙ্গল মহল এলাকায় সিপিএম ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করেছে। গোপনে পাশে পেয়েছে বিজেপিকে। তবে বিভিন্ন এলাকায় দলের অতীত সন্ত্রাস এবং সুযোগ থাকা সত্ত্বেও উন্নয়ন না করার মানসিকতা দলকে বিপাকে ফেলতে পারে।
জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে কোটা, ভেদিয়া ও উত্তর রামনগরে বিজেপি বড় ভূমিকা নিতে পারে এবং তার সম্ভাবনা বেশি।
সব মিলিয়ে আউসগ্রাম -২ নং ব্লকে তৃণমূলের একাধিপত্য প্রশ্ন চিহ্নের মুখে।উন্নয়নের ছোঁয়া পেলেও জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে বিধায়ক বনাম ব্লক সভাপতির দ্বন্দ্ব। কয়েকটি অঞ্চলে মিলিজুলি বোর্ড গঠন হতে পারে। তৃণমূলকে বধিবে যে আউসগ্রাম এলাকায় ধীরে ধীরে হয়তো বাড়িছে সে।