নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে গোটা রাজ্য জুড়ে অশান্তির খবর উঠে এসেছে। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও তার সহযোগী সংগঠনগুলি একযোগে বিরোধীদের মোকাবেলা করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লাগাতার ষাট দিন রাস্তায় থেকে মানুষের মধ্যে তৃণমূলের নবজানোয়ারের কর্মসূচি গতকালকেই শেষ করেছেন। বিভিন্ন জেলা ঘোরার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন আইপ্যাক সংস্থা পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি পঞ্চায়েত এলাকায় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ও আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব এলাকায় কার হাতে থাকবে তা নির্ধারণ করার জন্য ইতিমধ্যেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে তৃণমূল হাই কমান্ডের কাছে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে।
এরই মধ্যে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে হঠাৎই সামাজিক মাধ্যমে একটি চিঠি ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে পাওয়া একটি সর্বভারতীয় মহামতুয়া সংঘের সঙ্ঘাধিপতি শ্রীমতি মমতা ঠাকুরের নামাঙ্কিত এক চিঠিতে বাঁকুড়া জেলার নিবাসী আনন্দ বিশ্বাস ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের মৈনাক সাহারায় ও অভিষেক রায়কে সর্বভারতীয় মহা মতুয়া সংঘ থেকে বহিষ্কার করার কথা লেখা রয়েছে। চ্যানেল ‘এই বাংলায়’ ওই চিঠির সত্যতা যাচাই না করলেও উক্ত ওই চিঠিতে বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার মতুয়া ভক্তবৃন্দদের মাস পিটিশনের কথা উল্লেখ করে উক্ত অভিষেক ,আনন্দ ও মৈনাককে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘ থেকে বহিষ্কার করার কথা স্পষ্ট লেখা রয়েছে। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের কাজকর্মের বিরুদ্ধে আচরণ করছেন উক্ত ওই তিন ব্যক্তির ও তাতে মতুয়া ঠাকুর বাড়ির বদনাম হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ওই তিন ব্যক্তির কারণে সর্বভারতীয় মতুয়া সঙ্ঘের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে ভক্তবৃন্দদের মধ্যে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই চিঠি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরেই চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে গোটা শিল্পাঞ্চলের মতুয়া মহাসঙ্ঘের কর্মকর্তাদের মধ্যে।
একটি সূত্র মারফত জানা গেছে উক্ত ওই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সঙ্ঘের কাজকর্মের অসুবিধা ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার ফলেই তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে । পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলায় মতুয়া মহাসংঘের কাজ কর্মের বিস্তারের জন্য এই তিন ব্যক্তি অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে অনেক আগেই অভিযোগ করা হয়েছিল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের দপ্তরে। সম্ভবত সেই জন্যই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যাতে মতুয়া মহাসঙ্ঘের সাথী তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি কোনভাবেই ক্ষুন্ন না হয়, তাই এই তিন ব্যক্তিকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার একাধিক কর্মীরা জানিয়েছেন এদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ ইতিমধ্যেই লিপিবদ্ধ হয়েছে সংগঠনের কাছে, তাই এই কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর।