সোমনাথ মুখার্জী, অন্ডালঃ অন্ডালের উখরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে সন্নাসী তলা সাব সেন্টার । এই সাব সেন্টারে এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ পেয়ে থাকেন । এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে মোট তিন জন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুবিধার্থে সরকারিভাবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সীমানার মধ্যেই একটি কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়েছিল । যেখানে ২৪ ঘন্টা স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য যে স্বাস্থ্য কর্মী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকবেন তার বিশ্রাম করবার জন্য এই কোয়ার্টার তৈরি হয়েছিল। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বাম শাসনের অবসানের পর ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। এলাকাবাসীদের অভিযোগ শাসক দলের একজন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার সুবাদে গায়ের জোরেই সরকারি কোয়ার্টারে সংসার পেতে বসেছেন উখড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সোমা ব্যানার্জীরর স্বামী চঞ্চল ব্যানার্জি । তাদের আরও অভিযোগ, চঞ্চল ব্যানার্জী নামে ওই ব্যক্তি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সরকারি কোয়ার্টারটি দখল করে রেখেছেন এক প্রকার গায়ের জোর দেখিয়েই। শুধু তাই নয়, এতটাই দাপট তার যে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢোকার রাস্তাতেই চারচাকা গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলেও প্রতিবাদ করার জো নেই। ফলে স্থানীয় প্রসূতি মায়েরা বা রোগীরা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার সময় নিত্যদিন সমস্যায় পড়েন। অন্য এক এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেআইনিভাবে দখল করা সরকারি কোয়ার্টারটিতে চঞ্চল ব্যানার্জীর নেতৃত্বে প্রায়শই বসে মদের আসর। দিনের পর দিন এই ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়েই এলাকাবাসীরা সম্প্রতি এসডিও এবং বিডিওর কাছে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অন্যদিকে এলাকাবাসীদের অভিযোগ এবং নিজের অসুবিধার কথা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন বর্তমানে ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থকর্মী পাপিয়া কর্মকার। তিনি জানান সমস্যার ব্যাপারে মৌখিকভাবে তিনি সুপারভাইজারকে জানিয়েছেন, কিন্তু উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুপারভাইজার শান্তি দত্ত সব জেনেও নিশ্চুপ। ফলে প্রশ্ন উঠছে ওই সুপারভাইজারের স্বচ্ছতা নিয়েও। এবিষয়ে অভিযুক্ত চঞ্চল ব্যানার্জীর সঙ্গে দেখা করে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বিষয়টি হালকা করার চেষ্টা করেন। তার দাবি, নিজের বসত বাড়িটি ভেঙে যাওয়ায় সেখানে মেরামতির কাজ চলছে তাই আপাতত সরকারী উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোয়ার্টারে থাকছেন তিনি। যদিও তার উত্তরের পাল্টা হিসেবে গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, তাহলে গত দুবছর ধরে বাড়ি মেরামতির কাজ চলছে চঞ্চল বাবুর? আর বাড়ি মেরামতির ঘটনা সত্যি হলেও কি কোনও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোয়ার্টার বেআইনিভাবে দখল করে দিনের পর দিন পরিবার নিয়ে থাকা যায়? নাকি শুধুমাত্র শাসকদলের ছত্রছায়ায় রয়েছেন বলেই অভিযুক্ত চঞ্চল ব্যানার্জী দাপটের সঙ্গে সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করে চলেছেন? প্রশ্ন উঠছে একাধিক।