নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ – মাস দুয়েক আগে আসানসোলের বারাবনি থানাতে কেক কেটে এক তৃণমূল নেতার জন্মদিন পালন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। পরে অবশ্য ওই ওসিকে কর্তব্যে গাফালিতর অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়। এবার সেই ছবি ফিরে এল দুর্গাপুর মহকুমার অন্ডাল ব্লকের উখরা গ্রামপঞ্চায়েতে। তৃণমূল পরিচালিত উখরা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে কেক কেটে বার্থ ডে পালন করা হল এক ঠিকাদেরের। তাও আবার খোদ পঞ্চায়েত প্রধান ও উপ প্রধানের উপস্থিতিতে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ দলেরই একাংশ। যদিও এর মধ্যে খুব একটা অন্যায় দেখছেন না উখরার পঞ্চায়েত প্রধান মীনা কোলে। তিনি জানান, সোমবার পঞ্চায়েত সেক্রেটারি ইন্দ্রজিত মিশ্রর জন্মদিন ছিল। তাই পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীরা কেক কেটে ছোট করে তার জন্মদিনের আয়োজন করেছিলেন। অন্যদিকে ওই একই দিনে এলাকারই ছেলে তথা ঠিকাদার গৌতম সরকারেরও জন্মদিন ছিল। তিনি অফিসে সকলকে মিষ্টিমুখ করাতে গিয়েছিলেন। তাই তাকেও কেক খাওয়ানো হয়েছে। মীনা দেবী বলেন, সকলেই তার পরিবারের সদস্য। তাই পরিবারের সদস্যকে কেক খাইয়ে অভিবাদন জানানোয় অন্য়ায় বা বিতর্কের কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন। আবার উপপ্রধান শরণ সাইগল দাবি করেন গৌতম সরকার ঠিকাদার হলেও তিনি দলের পুরনো কর্মী। তাই কেক কেটে তার জন্মদিন পালন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সুর চরিয়েছে বিরোধিতারা। তাঁদের বক্তব্য, এই ঘটনায় প্রমাণ হয় ঠিকাদারদের সাথে শাসক দলের জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের গোপন আঁতাত আসলে কতটা গভীর। সিপিআইএম নেতা প্রবীর মণ্ডল বলেন, “বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ওই ঠিকাদারের কাজের মান নিয়ে বহুবার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযুক্ত ঠিকাদারের জন্মদিন পালন করা হচ্ছে পঞ্চায়েত অফিসের ভেতরে, প্রধান উপপ্রধানের উদ্যোগে। এ থেকে প্রমাণ হয় ডাল মে কুছ কালা হ্য়ায়।” বিজেপির জেলা নেতা শ্রীদীপ চক্রবর্তী বলেন, “ব্যক্তি স্বার্থ আর কাটমানির কারণে দল, সরকার, ঠিকাদার, সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে এই রাজ্যে। এই ঘটনায় প্রমাণ হয় ওই ঠিকাদারের সাথে পঞ্চায়েতের প্রধান উপপ্রধানের গোপন যোগসাজস রয়েছে।”
সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে ঠিকাদেরের জন্মদিন পালন নিয়ে বিতর্ক ও রাজনৈতিক তরজায় রীতিমতো সরগরম শিল্পাঞ্চল।