সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আজ অপরা একাদশী। আজকের দিনে যিনি এই ব্রতকথা শ্রবণ করেন, তার অশেষ পুণ্য লাভ হয়। ব্রহ্মান্ড পুরাণে এই ব্রত মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে। যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বলেন যে- হে কৃষ্ণ! জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম কী এবং তার মাহাত্ম্য কী, তা আমি আপনার থেকে শুনতে ইচ্ছা করি। আপনি অনুগ্রহ করে সেই বিষয়ে বর্ণনা করুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন,“হে মহারাজ, সকল মানুষের মঙ্গলের জন্য আপনি খুব ভালো প্রশ্ন করেছেন। বহু পুণ্য প্রদানকারী মহাপাপ বিনাশকারী ও পুত্রদানকারী এই একাদশী ‘অপরা’ নামে খ্যাত। এই ব্রত পালনকারী ব্যক্তি জগতে সবসময় প্রসিদ্ধি লাভ করে। ব্রহ্মহত্যা, গোহত্যা, ভ্রুণহত্যা, পরনিন্দা, পরস্ত্রীগমন, মিথ্যাভাষণ প্রভৃতি গুরুতর পাপ এই ব্রত পালনে নষ্ট হয়ে যায়। যারা মিথ্যাসাক্ষ্যদান করে, ওজন বিষয়ে ছলনা করে, শাস্ত্রের মিথ্যা ব্যাখ্যা প্রদান করে, জ্যোতিষের মিথ্যা গণনা ও মিথ্যা চিকিৎসায় রত থাকে, তারা সকলেই নরকযাতনা ভোগ করে। কিন্তু যে ব্যক্তিরাও এই ব্রত পালন করে, তারা সকল পাপ থেকে মুক্ত হয়। ক্ষত্রিয় যদি স্বধর্ম ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়, তবে সে ঘোরতর নরকগামী হয়। কিন্তু সেও এই ব্রত পালনে মুক্ত হয়ে স্বর্গগতি লাভ করে। মকর রাশিতে সূর্য অবস্থানকালে মাঘ মাসে প্রয়াগ স্নানে যে ফল লাভ হয়, শিবরাত্রিতে কাশী ধামে উপবাস করলে যে পুণ্য হয়, গয়াধামে বিষ্ণু পাদ পদ্মে পিন্ডদানে যা পাওয়া যায়, সিংহরাশিতে বৃহস্পতির অবস্থানে গৌতম নদীতে স্নানে, কুম্ভে কেদারনাথ দর্শনে, বদরিকাশ্রম যাত্রায় ও বদ্রীনারায়ণ সেবায়, সূর্যগ্রহণে কুরুক্ষেত্রে স্নানে, হাতি, ঘোড়া, স্বর্ণ দানে এবং দক্ষিণাসহ যজ্ঞ সম্পাদনে যে ফল লাভ হয়, এই অপরা একাদশী ব্রত পালন করলে সেই ফল লাভ হয়।”
পরিশেষে বলা হয় যে এই ব্রতকথা পাঠ ও শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয়।





