সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– দুর্গাপুরে কোটি টাকা ছিনতাই মামলায় রবিবার মাঝ রাত থেকে আসানসোলের সালানপুর থানা এলাকায় শুরু হয় পুলিশের অভিযান। দুর্গাপুর থানা, সালানপুর থানা ও রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। এলাকার দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুলিশের বিশাল টিম তল্লাশি চালায়। দুই ব্যবসায়ী হলেন সালানপুর থানার পিঠাকেয়ারির এলাকার বাসিন্দা পৃথ্বীরাজ জয়সওয়াল ও রূপনারায়নপুরের হটাৎ কলোনির জমি ব্যবসায়ী অজয় দাস। এই অভিযানে পুলিশ বেশ কিছু নথিপত্র সহ টাকা, চারচাকা গাড়ি, বাইক বাজেয়াপ্ত করেছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি দুটি বাড়িই সিল করে দেয় পুলিশ। পৃথ্বীরাজ জয়সওয়ালের বাড়ি থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় এবং তার স্ত্রীকে আটক করা হয়।
রূপনারায়ণপুরের ফকরাডিতে পৃথ্বীরাজ জয়সওয়ালের তিন তলা বড়সড় বাড়িটি উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। ভেতরে একাধিক চারচাকা ও দুই চাকা গাড়ি রাখার গ্যারেজ আছে। বাড়ির চারিদিকে সিসিটিভিতে মোড়া। স্থানীয় প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য জানান, আড়াই বছর আগেই ওই পরিবার এখানে বাড়িটি করে। কিন্তু তাদের কিসের ব্যবসা আছে তা তার জানা নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপনারায়ণপুর হিন্দুস্তান কেবলস রোডের পাশে পৃথ্বীরাজের রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। অন্যদিকে অজয় দাসের স্ত্রী চঞ্চলা কুমারী বলেন, “পুলিশ এসে আমাদের বাড়িটা সিল করেছে। আমার স্বামীর সাথে কথা হয়নি। স্বামী বাড়িতে নেই। ওরা ঘরের ভেতরে টাকা খুঁজছিলেন। কিছুই তারা পায়নি। আমার স্বামী জমি প্লটিংয়ের কাজ করেন।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিল্লির বাসিন্দা এক রেলওয়ে ঠিকাদারের এক মুন্সি সরকারি সংস্থার বরাতের প্রয়োজনে ১.০১ কোটি টাকা নিয়ে জাতীয় সড়ক ধরে আসানসোল থেকে কলকাতা যাওয়ার সময় দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড় সংলগ্ন পেয়ালা কালীবাড়ি এলাকায় লুঠেরাদের পাল্লায় পড়েন। গাড়ি থামিয়ে পুরো টাকাটাই নিয়ে তারা ফেরার হয়ে যায়। অভিযোগ আসানসোলের সাইবার পুলিশ বিভাগের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে এই লুঠ চলে। ওই ব্যবসায়ী দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন ও তদন্তে নেমে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে শুক্রবারই ৬ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে আবার তিনজ বর্তমান ও প্রাক্তন পুলিশ কর্মী। ধৃত অসীম চক্রবর্তী আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এএসআই এবং দুর্গাপুর থানায় কর্মরত। অন্যদু’জন সিআইডির বোম স্কোয়াডের এক কনস্টেবল চন্দন চৌধুরী ও পুলিশের চাকরি থেকে সাসপেন্ড হওয়া মৃত্যুঞ্জয় সরকার।
অন্যদিকে টাকা লুঠের ঘটনায় খোদ পুলিশের নাম উঠে আসায় তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে।