সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ- সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা এক মন্তব্য ঘিরে আসানসোল শিল্পশহরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। প্রসঙ্গত উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে নিউজলপাইগুড়ির সভায় খোলা মঞ্চ থেকে শনিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেন যে, তিনি খবর পেয়েছেন আয়কর দপ্তর আসানসোলে যে অভিযান চালিয়েছে সেই অভিযানে তৃণমূল নেতা ইমতিয়াজ আলির বাড়ি থেকে ১০০ কোটিরও বেশি নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরবেলা থেকে শুরু করে প্রায় তিন দিন ধরে আসানসোল ও বার্ণপুরে কমপক্ষে সাতটি জায়গায় হানা দিয়ে তল্লাশি চালায় আয়কর দপ্তর। রানিগঞ্জের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক বার্ণপুরের রহমতনগরের বাসিন্দা মহঃ সোহরাব আলি, ধরমপুরের বাসিন্দা স্ক্র্যাপ বা ছাঁট লোহার কারবারি সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ, আসানসোলের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ও প্রোমোটার মহেন্দ্র শর্মা বাড়িতে চলে আয়কর দপ্তরের এই তল্লাশি অভিযান। আর এই অভিযান চলার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের এক কাউন্সিলর সহ তৃণমূলের অনেক নেতা ও কর্মীদেরকে ইমতিয়াজ আহমেদের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছিলো। যদিও তারা কেউই সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি।
অন্যদিকে রবিবার এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারিক করা ওই মন্ত্যবের তীব্র বিরোধিতা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু। এদিন তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেন, “ইমতিয়াজ আহমেদ একজন ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে তৃণমূলের দূরেরও কোন সম্পর্ক নেই। শুভেন্দু অধিকারী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মাথার ঠিক নেই। তার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। তিনি যে কাউকে তৃণমূলের লোক বলছেন। এটা অন্যায়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, এসব বলে শুধু তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টাই করছেন, এমনটা নয়, তিনি ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে দলের নাম জড়িয়ে সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। এই অভিযান নিয়ে তো আয়কর দপ্তর কোন অফিসিয়াল বিবৃতি দেয়নি। তাহলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানলেন কি করে যে ওই অভিযানে কি পাওয়া গেছে? তবে কি তিনি আয়কর দপ্তরের মাথায় বসে আছেন?”
প্রসঙ্গত তিনদিন ধরে চলা আয়কর দপ্তরের এই তল্লাশি অভিযান নিয়ে আয়কর দপ্তরের কোনো আধিকারিক কোনো মন্তব্য তো করেননি এমনকি বিষয়টি নিয়ে কোনো বিবৃতিও দেওয়া হয়নি আয়কর দপ্তরের তরফে। তা সত্ত্বেও বিরোধী দলনেতার টাকা বাজেয়াপ্ত করা নিয়ে কীভাবে ও কিসের ভিত্তিতে মন্ত্যব্য করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি শিল্পশহরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কও।