সংবাদদাতা, আসানসোলঃ– অবশেষে নির্বাচনের দেড় বছর পর আসানসোল পুরনিগমের দুই ডেপুটি মেয়র শপথ গ্রহণ করলেন বুধবার। এদিন আসানসোল পুরসভার প্রেক্ষাগৃহে আসানসোল পুরনিগমের দুই কাউন্সিলর অভিজিৎ ঘটক এবং ওয়াসিম উল হক ডেপুটি মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। আর শপথ গ্রহণের পরই গাড়ুই নদী সংস্কার নিয়ে উদ্যোগ শুরু করে দেন ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক।
প্রসঙ্গত দেড় বছর আগে আসানসোল পুরনিগমের নির্বাচনের পর শাসক দল জয়লাভ করে পুরনিগমের দায়িত্ব নেয়। তখন ডেপুটি মেয়র হিসেবে দুজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু রাজ্যের মিউনিসিপাল অ্যাক্টে একজন ডেপুটি মেয়র থাকার কথা আইনে রয়েছে। সেক্ষেত্রে আইনের সংশোধনীর প্রয়োজন ছিল। রাজ্য মন্ত্রিসভায় সেই আইনে সংশোধনী বিল পাস হয়। কিন্তু আটকে যায় তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে।তিনি সেই সংশোধনী বিলে সই করেননি। পরবর্তীকালে রাজ্যপাল বদল হলে বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেই সংশোধনী বিলে সই করলে দ্বন্দ্ব কাটে। শপথ গ্রহনের পর দুই ডেপুটি মেয়র জানান, আগামী দিনে আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডে উন্নয়ন করাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। এবং শপথ গ্রহনের পর পরই এদিন ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক গাড়ুই নদী পরিদর্শন করে সংস্কারের কথা জানান। এদিন ডেপুটি মেয়রের সঙ্গে ছিলেন দুই বোরো চেয়ারম্যান উৎপল সিনহা ও অনিমেষ দাস, পুরনিগম এবং সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা। তারা আসানসোলের কালিপাহাড়ি থেকে কাল্লা ও রেলপার হয়ে কল্যানপুর পর্যন্ত গাড়ুই নদী পরিদর্শন করেন। বিশেষ করে এই এলাকার মধ্যে যে সব ব্রিজ আছে, সেগুলি তারা খতিয়ে দেখেন।
উল্লেখ্য আসানসোল পুরনিগমের বর্তমান পুর বোর্ড গঠন হওয়ার পরই মেয়র বিধান উপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাদের প্রধান ও অন্যতম লক্ষ্য হলো আসানসোলের রেলপার এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া গাড়ুই নদী সংস্কার করা এবং নদীর দুপাশ দখল মুক্ত করে বিউটিফিকেশন করা।
এদিন গাড়ুই নদী পরিদর্শন করে ডেপুটি মেয়র বলেন, আমরা পুরনিগমের তরফে গাড়ুই নদী নিয়ে যা করার তা করছি। কিন্তু এই নদী নিয়ে একটা স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। তাই এদিন সেচ দপ্তর ও পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ারদেরকে সঙ্গে নিয়ে কাল্লা থেলে রেলপার এলাকা পর্যন্ত পরিদর্শন করলাম। এবার আমরা একটা ডিটেইলস প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাবো। আপাতত পুরনিগমের তরফে নদীতে জমে থাকা গার্বেজ বা জঞ্জাল সাফ করছি। গার্ডওয়াল বসাচ্ছি। নদীর দুপাশ দখল হয়ে গেছে। তাদেরকে সরে যেতে বলা হয়েছে। তারা না সরলে আমাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা এই এলাকার মধ্যে দিয়ে যাওয়া গোটা গাড়ুই নদীকে সংস্কার করতে চাই। তারজন্যই ডিটেইলস প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করা হবে।
প্রসঙ্গতঃ, এই গাড়ুই নদী প্রতি বছর বর্ষার সময় বৃষ্টির জলে ফুলেফেঁপে উঠে। তাতে শুধু রেলপার এলাকা নয়, আসানসোল শহরের একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।