নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ চারপাশে আগুনের লেশমাত্র নেই। অথচ ঘরের মেঝের একটি নির্দিস্ট অংশে কোন পাত্রে ঠান্ডা জল রাখলেই তা মুহুর্তে ফুটতে শুরু করছে, এতটাই গরম হচ্ছে জল যে সেখানে ভাত পর্যন্ত সেদ্ধ করা সম্ভব। অদ্ভুতুড়ে মনে হলেও এমনই অবাক করার ঘটনা সামনে এসেছে আসানসোল পুরসভা এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের একটি বাড়িতে। শ্যামলী চ্যাটার্জী নামে ওই বাড়ির মালকিনের বয়ান থেকে জানা গেছে, গত রবিবার থেকে ঘটনাটি তাদের নজরে পড়েছে। কি সেই ঘটনা? তিনি জানালেন, গত রবিবার বাড়ির এক সদস্যা ঘর মুছতে গিয়ে প্রথম অনুভব করেন সিড়ির একটা অংশ অস্বাভাবিক গরম হয়ে উঠেছে। বিষয়টি তিনি পরিবারের অন্যদের জানালে তারা প্রাথমিকভাবে মনে করেছিলেন পাশেই ফ্রিজ রাখা থাকায় জায়গা গরম হয়ে উঠেছে। সেইমতো ফ্রিজটি অন্যত্র স্থানান্তর করলেও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ইলেক্ট্রিসিয়ান ডেকা পাঠান। কিন্তু ইলেকট্রিশিয়ান সব দেখে জানান, বিদ্যুতের সমস্যার জন্য মেঝে গরম হচ্ছে না। স্বভাবতই একথা জানার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাড়ির সদস্যরা। অন্যদিকে মেঝের ওপরে জলের বাটি রাখতেই জল গরম হয়ে যাচ্ছে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেন ওই বাড়িতে। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলার, জামুড়িয়া থানায় ও ইসিলের শ্রীপুর এরিয়ার জেনেরাল ম্যানেজারকে লিখিত ভাবে জানানো হয়। যদিও পরিবারের অভিযোগ, প্রশাসনে জানানো সত্বেও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেউই এগিয়ে আসেন নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ওই এলাকার দুপাশেই ১০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে ব্রিটিশ আমলের খনি, যার একটি এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, যে অংশে বাড়িটিতে এই ঘটনা ঘটেছে সম্ভবত সেই বাড়ির নিচে দিয়েই গিয়েছে খনির সুড়ঙ্গ পথ। আর সেখানে দিনের পর দিন জমতে থাকা মিথেন গ্যাস থেকেই এই বিপত্তি। অনেকেরই আশঙ্কা, মিথেন গ্যাসের চাপে যেকোনো সময় ওই বাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। যদিও এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শ্রীপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার জে.সি রায় জানিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দ্রুত ওই বাড়িটিতে আধিকারিকরা যাবেন। অন্যদিকে ভয়াবহ আতঙ্কে ওই বাড়ির সদস্যরা ইতিমধ্যে ঘর ছেড়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশাসনের গাফিলতি এবং উদাসীনতার জেরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।