সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ– অকাল মৃত্যু কেড়ে নিয়েছে সন্তানকে। সেই শোক কাটিয়ে উঠে কন্যাসম বিধবা বৌমার আবার বিয়ে দিয়ে নজির গড়লেন জামুড়িয়ার চিঁচুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা কিশোর চট্টোপাধ্যায়।
কিশোর চট্টোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বছর পাঁচেক আগে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের এক বছরের মাথায় সাপের কামড়ে হঠাৎ মৃত্যু হয় ইন্দ্রজিতের। একমাত্র পুত্র সন্তানের মৃত্যু শোকে ভেঙে পড়েন কিশোরবাবু। অন্যদিকে স্বামীকে হারিয়ে একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন সদ্য বিবাহিতা পূজাও। স্বামীর মৃত্যুর পর নিজের সন্তানকে নিয়ে শ্বশুড়ের ভিটেতেই থেকে যান তিনি। এদিকে দেখতে দেখতে কেটে যায় চারটে বছর । সন্তান শোক কিছুটা সামলে উঠলেও বৌমার অকাল বৈধব্য চিন্তায় ফেলে কিশোরবাবুকে। পুত্রবধূ ও নাতনির ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুত্রবধূর আবার বিয়ে দেওার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। পুনরায় বিয়ে করার জন্য প্রথমে রাজি করান পুত্রবধূকে। পরে চিঁচুড়িয়া গ্রামেরই বাসিন্দা ও ছেলে ইন্দ্রজিতের বন্ধু প্রভাত ফৌজদারকে পাত্র মনস্থ করে পুত্রবধূকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান পাত্র ও তার পরিবারের লোকজন। অবশেষে শুক্রবার সকালে আসানসোলের ঘাগরবুড়ি মন্দিরে দুই পরিবারের উপস্থিতিতে চারহাত এক করে দেওয়া হয়। কিশোরবাবু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পুত্রবধূর হাতে নতুন জীবন-সঙ্গী তুলে দেন। বিবাহ সুসম্পন্ন হয়। দুপক্ষের আত্মীয় পরিজনেরা নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করেন।
এখনও বিধবা বধূর আবার বিয়ের কথা শুনলে ভুরু কুঁচকান অনেকই। সেই সামাজিক পটভূমিতে দাঁড়িয়ে গ্রামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য কিশোর চট্টোপাধ্যায়ের এই মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি, প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন অনেকেই।