সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- আসানসোল চিটফান্ড কেলেঙ্কারি কাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত তৃণমূল মাইনোরিটি সেলের নেতা শাকিল আহমেদের ছেলে তহসিন আহমেদ। অভিযোগ দায়ের হওয়ার তিনদিন পরে অবশেষে শনিবার তাকে গ্রেফতার করে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস জানান, আসানসোল উত্তর থানার ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে চন্দ্রচূড় মন্দিরের কাছ থেকে তহসিন আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের কাছে খবর ছিলো যে, তহসিন আহমেদ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পালানোর চেষ্টা করছে। সেই মতো অভিযান চালিয়ে তাকে এদিন সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের চন্দ্রচূড় মন্দিরের মোড়ে ঝাড়খণ্ডে যাওয়ার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তহসিন। তখনই তাকে গ্রেফতার করে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। তার কাছ থেকে ২৫০ গ্রামের মতন সোনা উদ্ধার করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি কাণ্ডে সরগরম আসানসোল শিল্প শহর। অভিযোগ বেশি সুদের লোভ দেখিয়ে আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের জাহাঙ্গীর মহল্লার বাসিন্দা তহসিন আহমেদ প্রায় তিন হাজার মানুষের কাছ থেকে সাড়ে তিনশো কোটি টাকারও বেশী অর্থ আত্মসাৎ করেছে। প্রতারিত বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছে প্রথম কয়েক মাস প্রতিশ্রুতি মতো সুদ দেওয়া হলেও পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে টাকা চাইতে গেলে নানা অজুহাত দেওয়া হতে থাকে। অবশেষে ২০ অক্টোবর বিনিয়োগকারীদের বকেয়া টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তহসিন। কিন্তু ওই দিন তার হদিশ পাওয়া যায়নি। এমনকি টাকা চাইতে গিয়ে শারীরিক হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ করেছেন অনেকে। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন প্রতারিতরা এবং অভিযোগ দায়ের হয়।
এই তহসিন আহমেদের বাবা শাকিল আহমেদ পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সহ-সভাপতি পদে ছিলেন গত দু’বছর ধরে। গত ১৯ অক্টোবর তাকে সেই পদ থেকে তাকে সরানো হয়। শাকিল আহমেদ বাম আমলে সিপিএম পরিচালিত আসানসোল পুরনিগমে দুবারের কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ ছিলেন।
অন্যদিকে এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই চরম অস্বস্তিতে পড়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী বিজেপি ও কংগ্রেসের তীব্র আক্রমণ শানায়। দোষীদের গ্রেফতার ও টাকা ফেরতের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ ও আন্দোলন। যদিও গোটা বিষয়টি থেকে দায় ঝেড়ে তৃণমূল নেতৃত্ব জানায়, কয়েক মাস আগেই ঘটনার কথা জানতে পেরে সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি পদ ও দল থেকে অভিযুক্তের বাবা শাকিল আহমেদকে সরানোর জন্য উচ্চ নেতৃত্বর কাছে আবেদন করা হয়েছিল। সেই মতো তাকে সরানো হয়েছে। এখন বিরোধীরা এটা নিয়ে অযথা রাজনীতি করছে।




















