সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- কয়লা পাচার মামলায় মঙ্গলবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে সাক্ষ্য দিলেন কোল ইন্ডিয়ার সিএমডি বা চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিএম প্রসাদ। সাক্ষ্য দান শেষে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় আগামী ২৯ আগস্ট।
প্রসঙ্গত, যখনই কোন সরকারি কর্মচারী বা পাবলিক সারভেন্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়, তখন সেই মামলা চালানোর জন্য ১৯ নং ধারায় উর্ধতন আধিকারিকের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এই কয়লা পাচার মামলায় ইসিএলের বেশ কয়েকজন কর্মী আধিকারিকের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাদের নামে চার্জ গঠনও হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে মামলার চালানোর জন্য কোল ইন্ডিয়ার সিএমডি অনুমতি দিয়েছিলেন। তাই এদিন তিনি তার সাক্ষ্য দান করেন। সিএমডি আদালতে বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে জাানন যে, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিলো যে, এই মামলায় ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড বা ইসিএলের কর্মচারী ও আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আনা সিবিআইয়ের অভিযোগগুলি সঠিক। তাই তিনি তদন্তের অনুমতি দেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু বলেন, “সিবিআইয়ের দেওয়া প্রদত্ত নথিপত্র যাচাই না করে সিএমডি কিভাবে বলতে পারেন সেগুলো সঠিক? তাদের উচিত ছিল প্রথমে সিবিআইয়ের দেওয়া নথি যাছাই করে তাদের নিজস্ব স্তরে তদন্ত করে খতিয়ে দেখা ও তার পর অনুমতি দেওয়া।” যদিও, সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার পাল্টা এজলাসে বলেন, “পুরোটাই সঠিকভাবে করা হয়েছে। তাই কোল ইন্ডিয়ার সিএমডির অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ভুল নেই।” এরপরই, এদিনের মতো সাক্ষ্য দান পর্ব শেষ হয়।
এই কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই ১০ জন পাবলিক সারভেন্ট বা সরকারি অফিসারের চার্জ গঠন করেছে। এরা কোন না সময় ইসিএলের সদর দপ্তর, এরিয়া ও সিআইএসএফ ও নিরাপত্তা বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বা আছেন।
এদিন কয়লা পাচার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা, জয়দেব মণ্ডল ছাড়াও অন্যান্য সকল অভিযুক্ত উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই মোট তিনটি চার্জশিট আসানসোল সিবিআই আদালতে জমা দিয়েছে। তাতে ৫০ জনের নাম আছে। তার মধ্যে অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র এখনও ফেরার। তাকে সিবিআই ধরতে না পারায়, চার্জশিটে পলাতক বা এ্যাবসকন্ড দেখানো হয়েছে। এছাড়া মামলার শুনানি চলাকালীন একজন অভিযুক্ত মারা গেছেন। যে কারণে সিবিআই মোট ৪৮ জনের নামে চার্জ গঠন করে। সেই ৪৮ জনের মধ্যে ব্যক্তিগত তিনজনের নামে চার্জ গঠনের করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো বিকাশ মিশ্র, অনুপ মাজি ওরফে লালা ও রত্নেশ্বর ভার্মা। এর পাশাপাশি আরো ২৩ জনের নামে, ১০ সরকারি কর্মী আধিকারিকের নামে ও ১২ টি কোম্পানির নামে এই মামলায় চার্জ গঠন করা হয়েছে।





