সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- আসানসোলে কমিউনিটি হল বিতর্কে মুখ খুললেন মেয়র বিধান উপাধ্যায়। অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দাবি করলেন মেয়র।
প্রসঙ্গতঃ, আসানসোলের ২৩ নং ওয়ার্ডের শ্রীনগর এলাকার শগুন কমিউনিটি হলের হস্তান্তর নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আসানসোল পুরনিগমের তরফে ওই কমিউনিটি হলের দায়িত্ব টেন্ডার ডেকে বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সোমবার পুরনিগমের টিম এলাকায় পৌঁছলে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সি কে রেশমা সেই কাজে বাধা দেন। পুরনিগমের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও লিগ্যাল এ্যাডভাইজারের সঙ্গে তুমুল বাদানুবাদ হয় তার। অবশেষে হস্তান্তর প্রক্রিয়া না করেই ফিরে যায় পুরনিগমের টিম।
সিকে রেশমা দাবি করেন ওই কমিউনিটি হল এলাকার গবীর মানুষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য় ভাড়া নেয়। বেসরকারি সংস্থার হাতে হলের দায়িত্ব দেওয়া হলে ওই হল আর সাধারণ গবীর মানুষ তাদের প্রয়োজনে ভাড়া নিতে পারবেন না। পাশাপাশি টেন্ডারের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, “আসানসোল পুরনিগমের নির্মিত কোনও সম্পত্তি কারোর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সবকিছু পুরনিগমের সম্পত্তি। ওই কমিউনিটি হল সরকারি টাকায় তৈরি। তাই যদি কোনও কোম্পানি টেন্ডারের মাধ্যমে কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে থাকে, তাহলে তাতে বাধা দেওয়ার অধিকার কারোর নেই। ” তিনি সরাসরি বলেন, “সি কে রেশমা চাইছেন, যতটা সম্ভব কম টাকা আসানসোল পুরনিগম দেওয়া। আগে আসানসোল পুরনিগম ওই কমিউনিটি সেন্টার থেকে ১ লক্ষ টাকার কিছু বেশি পাচ্ছিল। কিন্তু এখন সেখান থেকে বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকারও বেশি পাওয়া যাবে। এমন পরিস্থিতিতে পুর কর্তৃপক্ষ কেবলমাত্র সেই কাজই করবে যা পুরনিগমের জন্য উপকারী।”
পাশাপাশি তিনি জানান, সিকে রেশমা আসানসোল পুরনিগমের আধিকারিকদের কাজ করতে বাধা দিয়েছেন। এই কাজের জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। আসানসোল পুরনিগমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপির রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন ১০ বছর পরে হঠাৎ করে কমিউনিটি হলের জন্য টেন্ডার করা হল?এর পিছনে রহস্য কি?” পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করে বলেন যে, “বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার থেকে সংগৃহীত টাকা আসানসোলের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে ভাগাভাগি হচ্ছে। একদিকে কাউন্সিলর একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি দ্বারা ঘটনার তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন, অন্যদিকে মেয়র বলছেন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে। আসলে এটা মূলতঃ মেয়র এবং মন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই। এই এলাকার মানুষ এই দুই পক্ষের মধ্যে পিষ্ট হচ্ছেন।”


















