eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসানসোল পকসো আদালত - কন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড

আসানসোল পকসো আদালত – কন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড

রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জ্জী, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান -: শেষ পর্যন্ত পিতা-পুত্রীর মধুর সম্পর্কও কি কলঙ্কিত হতে চলেছে আধুনিক যুগে! কন্যার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ও আজ সন্দেহের তালিকায়! এরপর হয়তো প্রত্যেক কন্যা তার জন্মদাতা পিতাকেও এড়িয়ে চলতে শুরু করবে! আসানসোলের হীরাপুরে ঘটে যাওয়া ঘটনা অন্তত সেইদিকেই ইঙ্গিত করে। এ বড় লজ্জাজনক ঘটনা!

সেদিন ছিল ২০২৪ সালের ১২ ই মে রাত। অন্য পাঁচটা রাতের মত সেদিনও হীরাপুরের নরসিংহবাঁধের ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়েটি তার মা, বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে নিশ্চন্তে ঘুমিয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি জানতনা এটাই ছিল তার জীবনের শেষ ঘুম যেটা আর কোনোদিনই ভাঙবেনা! ১৩ ই মে সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ পর্যন্ত চাদরে ঢাকা মেয়েকে দেখে মা চমকে ওঠেন। তার সন্দেহ হয়। চাদর সরিয়ে দেখতে পান মেয়ের গলায় রয়েছে কালশিটে দাগ এবং নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তিনি বুঝতে পারেন, মেয়ের সঙ্গে খারাপ কিছু একটা হয়েছে। স্বামীর নির্লিপ্ত ভাব দেখে বিস্মিত মা চিৎকার করে ওঠেন। ছুটে আসে প্রতিবেশীরা। মেয়েকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর জানা যায় নাবালিকাকে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। ১৪ ই মে নাবালিকার মা ঘটনার সঙ্গে স্বামী জড়িত আছে সন্দেহ করে হীরাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পকসো আইনে স্বামীকে গ্রেপ্তার করে।

তদন্তকারী অফিসার এসআই শুভাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেন। সওয়াল-জবাবের শেষে সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক সুপর্ণা বন্দোপাধ্যায় নির্যাতিতার বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং এক নজিরবিহীন রায়ে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি মৃতার মাকে ক্ষতি পূরণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।এই মামলায় সরকারি আইনজীবী ছিলেন সোমনাথ চট্টরাজ।

জানা যাচ্ছে, মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে এই রায় ঘোষণা করা হয়। এই মামলায় মৃতার মা, বেশ কয়েকজন আত্মীয় স্বজন, হাসপাতালের চিকিৎসক, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সহ মোট ১৬ জন সাক্ষী দেন। এই মামলার সরকারি আইনজীবীর দাবি, এই প্রথম এখানে কোনো আসামীর মৃত্যুদন্ডের সাজা ঘোষণা করা হলো।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments