সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- আসানসোলের রুপনারায়নপুরের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ। পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পরও গত প্রায় সাত দিন ধরে নিখোঁজ ওই কিশোরী। এদিকে মুক্তিপণ চেয়ে ম্য়াসেজ এসেছে পরিবারের কাছে। পুলিশ সফলতা না পাওয়ায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন অপহৃত কিশোরীর বাবা ও পরিজনেরা লোকরা।
জানা গেছে অপহৃত কিশোরী রূপনারায়ণপুর ডিএভি পাবলিক স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তারা বাবা ইসিএলের কর্মী জাহাঙ্গীর খান জানান গত ১৯ জুলাই শনিবার সকাল পৌনে দশটা নাগাদ তার মেয়ে টিউশনি পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ঘরে না ফেরায় খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। কিশোরীর মোবাইল ফোন সুইচড অফ পাওয়া যায়। টিউশন শিক্ষক জানান ওই দিন কিশোরী পড়তে যায়নি। কিশোরীর সহপাঠী এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো তথ্য না পেয়ে অবশেষে সালানপুর থানার দ্বারস্থ হন জাহাঙ্গীর খান। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার তদন্তে নামে। ছাত্রীটির মোবাইল কিছুক্ষণের জন্য চালু হলে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন আসে আসানসোল বাস স্ট্যান্ড। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন আসানসোল বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছন কিন্তু ছাত্রীর হদিশ পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পরেই ছাত্রীটির মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন আসে আসানসোল রেল স্টেশন। এরপর দ্রুত আসানসোল রেল স্টেশনে পৌঁছয় পুলিশ, কিন্তু ছাত্রীর খোঁজ পাওয়া যয়নি। অথচ স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় সন্ধে ৭:১৬ মিনিটে ওই ছাত্রী সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছে। পরবর্তীতে জানা যায় মেয়েটি প্রয়াগরাজে পৌঁছে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছে যায় কিন্তু প্রয়াগরাজেও তার কোন খোঁজ না পেয়ে পুলিশ খালি হাতে ফিরে আসে। পরে ২১ জুলাই পুলিশ টাওয়ার লোকেশনে গুজরাটের ওধনা রেল স্টেশনের লোকেশন আসে। আবার পরে টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী সুরাট মেডিকেল কলেজের লোকেশন মেলে। কিন্তু সমস্ত শক্তি কাজে লাগিয়েও তদন্তে এখনো সফল হয়নি পুলিশ।
এদিকে অপহরণকারীরা টাকা আদায়ের জন্য ছাত্রীর বাবার মোবাইলে কিউআর কোড পাঠিয়েছিল। সেই কিউআর কোডে কিছু টাকাও পাঠানো হয়। সেই লেনদেন সূত্র হিসেবে কাজে লাগিয়ে পুলিশ অপহরণকারীদের ট্র্যাক করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে ছাত্রীটির মোবাইল ফোন খুব কম সময়ের জন্য চালু করে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে বাড়িতে। কখনো তাতে লেখা থাকছে , বাবা তুমি কোথায়, আমাকে দ্রুত এখান থেকে উদ্ধার করো। কখনো বা অন্য কিছু কথা। অপহৃত ছাত্রীর পরিজনের আশঙ্কা অপহরণকারীরা ছাত্রীটিকে সম্ভবত কোন কিছু খাইয়ে বেহুঁশ করে কিংবা প্রচন্ড ভয় দেখিয়ে রেখেছে। তাই মাঝে মাঝে তার মোবাইল চালু হলেও কোন কিছুই সে বলার মত অবস্থায় থাকছে না।
এদিন ছাত্রীর বাবা কাঁদতে কাঁদতে হাতজোড় করে বলেন, “পুলিশ তাদের সাধ্যমতো তদন্ত করছে। কিন্তু আমি আমার মেয়েকে ফিরে পেতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাচ্ছি। তিনি আমার মেয়েকে ফিরে পেতে কিছু একটা করুন।” অপহৃত ছাত্রীর বাবা এবং গোটা পরিবার এখন অধীর আগ্রহে তাদের মেয়ের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছেন। এখন পুলিশ তদন্তে কতটা সফলতা পায় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।




