eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসানসোল গ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গাজন উৎসব

আসানসোল গ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গাজন উৎসব

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– এই এআই-এর যুগেও বাংলার গ্রাম বাংলার প্রচীন গাজন উৎসব অমলিন। এখনও বাংলার গ্রামে গ্রামে পালিত হয় এই প্রচীন উৎসব। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল গ্রাম তার মধ্যে অন্যতম। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে এই গ্রামে গাজন উৎসব পালিত হয়ে আসছে প্রচীন রীতিনীতি মেনেই। এখন এই উৎসবের আয়োজন করে আসানসোল গ্রামের শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বর জিউ দেবোত্তর ট্রাস্ট ও গাজন উৎসব উদযাপন কমিটি। খাতায় কলমে ট্রাস্ট ও কমিটি উৎসব পরিচালানার দায়িত্বে থাকলেও, গ্রামের প্রতিটি পরিবারের ছোট-বড়, পুরুষ-মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই উৎসবে যোগদান করেন। সাত দিন ধরে চলে উৎসব। ধর্মীয় রীতিনীতির পাশাপাশি থাকে গান, যাত্রাপালা সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।

এবারের গাজন উৎসব শুরু হয়েছে গত বুধবার ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায়। চলবে গাজনের দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তি পর্যন্ত। বুধবার গ্রামের শিবমন্দিরে এক অনুষ্ঠানে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। বৃহস্পতিবার শিবমন্দিরে গাজন সন্ন্যাসীদের ব্রতারম্ভ হয়। শুক্রবার গাজন সন্ন্যাসীদের শোভাযাত্রা সহকারে শ্রী শ্রী বানেশ্বরের নিদ্রাভঙ্গ অনুষ্ঠান ও নগর পরিক্রমা হয়। পরে হয় স্নান ও শিবদোলা। রবিবার নীলষষ্ঠীর দিন সকালে নীলকন্ঠেশ্বরের পুজো ও হোমযঞ্জ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে হয় ঠাকুরের জুড়িভোগ। বিকেলে স্থানীয় রামসায়ের পুকুর থেকে শিবমন্দির পর্যন্ত হয় গাজন সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসীনিদের দণ্ডী ও শিবদোলা। এদিন রাত একে একে হয় একপদে নৃত্য, সন্ন্যাসীদের বাণবিদ্ধ অবস্থায় ধুনোদান, শ্রী শ্রী নীলকন্ঠেশ্বরের শৃঙ্গারবেশ ধারণ ও পুজো এবং সবশেষে পবিত্র কলস আনা।

বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার গাজন সন্ন্যাসীদের নিম হলুদ সেবন ও নিয়মভঙ্গ হবে। সন্ধ্যায় হবে ধর্মযঞ্জ ও জাতি, ধর্ম এবং বর্ণ নির্বিশেষে পংক্তি ভোজনের মধ্যে দিয়ে সাতদিনের গাজন উৎসবের সমাপ্তি। উৎসব কমিটি কর্তৃপক্ষ জানান, সাতদিনই গাজন উৎসব উপলক্ষ্যে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে গ্রামের শিবমন্দিরে। যার মধ্যে রয়েছে নৃত্যানুষ্ঠান, বাউল ও যাত্রাপালা। এবারের কলকাতার দুটি নামী অপেরার পাশাপাশি আসানসোল গ্রামের ছাত্র সংঘও দুটি পালা পরিবেশিত করেছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments