সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– জেলা ছাড়াও পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও প্রতিদিন আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন কয়েক হাজার রোগী। কিন্তু গত দুমাস ধরে ব্যাপক সমস্যায় সম্মুখীন হচ্ছেনে এখানে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীরা। বিশেষত অন্তঃসত্ত্বা ও মহিলা রোগীরা। কারণ গত দু মাস ধরে হাসপাতালে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা ইউএসজি পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। যে কোনো জেলা হাসপাতালের মতোই এই হাসপাতালেও ইউএসজি করাতে গেলে কোনও টাকা লাগেনা । চিকিৎসকের পরামর্শ থাকলেই যে কোন রোগী বিনামূল্যে নির্দিষ্ট বিভাগে গিয়ে ইউএসজি পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। ইউএসজি পরীক্ষা বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। প্রসঙ্গত এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন খুব সাধারণ বা নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষজন। ফলে হাজার হাজার টাকা খরচ করে বাইরে থেকে ইউএসজি করানো সম্ভব হচ্ছে না এই সব রোগীদের। ফলে ঠিকমতো চিকিৎসাও হচ্ছে না তাদের।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতি দিন ৬৫ থেকে ৭৫ জন রোগীর ইউএসজি হতো। এমনকি কোনো কোনো দিন ১০০ থেকে ১২০ জন রোগীরও ইউএসজি করা হতো। বর্তমানে এই পরিষেবা থেকে বঞ্জিত হচ্ছেন শয়ে শয়ে রোগী। কিন্তু একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এই পরিস্থিতি কেন? বিশেষত যেখানে শিল্পাঞ্চল ছাড়াও আশেপাশের জেলারও বহু মানুষজনও চিকিৎসা পরিষেবার জন্য নির্ভর করেন। এই প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, “ইউএসজি করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে জেলা হাসপাতালে একজনই চিকিৎসক ছিলেন। ওই চিকিৎসক প্রথমে অল্প কিছুদিনের জন্য ছুটি নেন। পরে কাজে যোগ না দিয়ে অনলাইনে ছুটি বাড়িয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে ওই বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় ইউএসজি করা যাচ্ছে না। এছাড়া বেশ কয়েক জন সিনিয়র চিকিৎসকও অবসর নিয়েছেন।”
অন্যদিকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমি গোটা বিষয়টা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়ে জেলা হাসপাতালে ইউএসজি পরীক্ষা চালু হবে।
তবে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে শুধু রেডিওলজি বিভাগই নয় হাসপাতালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই। এরই মধ্যে কিছু বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক আবার চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আবেদন করেছেন। অনেকে আবার চাকরি ছাড়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করছেন। এই পরিস্থিতিতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা আরও বেশী সংখ্যক মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।