সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- আসানসোলের পুর কর্মীকে শ্যুটআউট করে খুনের মামলায় বড় সাফল্য পেলো পুলিশ। ঘটনায় খুনের পরিকল্পনাকারী চাঁদ ওরফে সঈফ আলি কুরেশি নামে আরো এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে শ্যুটআউটে ব্যবহৃত বন্দুক ও বাইক। খুনের ঘটনায় মোট অভিযুক্ত ১০ জন। তাদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দু’জন এখনো ফেরার।
প্রসঙ্গত গত ২৯ অগস্ট কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ি অন্তর্গত নিয়ামতপুরের রহমান পাড়ায় আসানসোল পুরনিগমের কর্মী জাবেদ বারিকে তার বাড়ির কাছে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে শ্যুট করে চম্পট দেয় দুই দুষ্কৃতী। সিসিটিভিতে ধরা পড়ে পুরো ঘটনা। তদন্তে নেমে ৩০আগস্ট জাভেদ বারিকের খুড়তুতো ভাই ইন্তেকাফ আলমকে গ্রেপ্তার করে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ি পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে খুনের মাস্টার মাইন্ড মৃত জাবেদ বারিকের খুড়তুতো বোন ফারাহ নাজ। গত ২ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি থেকে ফারাহ নাজ ও তার গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে বারিক জাভেদের জলপাইগুড়িতে কয়েক কোটি টাকার পৈতৃক জমি রয়েছে। সেই জমি নিয়ে খুড়তুতো ভাইবোনেদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। এরই মাঝে ফারাহ নাজ জাবেদকে খুন করার পরিকল্পনা করে এবং ৫লক্ষ টাকার বিনিয়ে একটি শ্যুটার গ্যাংকে খুনের সুপারি দেয়। সেই সূত্র ধরেই গত সোমবার শ্যুটার সহ ওই গ্যাংয়ের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরে, ধৃতদেরকে আরো জেরা করে পুলিশ জানতে পারে ফারহা, তার স্বামী আসিফ ও আসানসোলের দক্ষিণ থানার বস্তিন বাজারের বাসিন্দা চাঁদ ওরফে সঈফ আলি কুরেশি এই খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। আসিফ চাঁদকে জাভেদকে খুন করার জন্য একজন কন্ট্রাক্ট কিলার বা শ্যুটারের ব্যবস্থা করতে বলে সেই মতো চাঁদ তার বন্ধু আসানসোলের রেলপারের বাসিন্দা বছর ২০ র আদিল আলমকে এই কাজ করার বরাত দেয়। আদিলই সেই রাতে নিয়ামতপুরে জাভেদকে গুলি করে। ঘটনা ঘটার সময় আদিলের সঙ্গে মোটরবাইকের পিছনে বসেছিলো সোনু ওরফে মহঃ এহতেশান। সোনুর বাইকটি এই ঘটনা ঘটানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। মোটামুটি তিন থেকে সাতদিন জাভেদ বারির গতিবিধি রেকি করে অভিযুক্তরা। এরপর ২৯ আগষ্ট রাতে জাবেদ বারিকে খুন করা হয়। শ্যুটআউটে ব্যবহৃত বন্দুক ও বাইকটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতরা যে পিস্তলটি ব্যবহার করেছিলো, সেটি দেশী ও বিহার থেকে কেনা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানান আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) সন্দীপ কররা। তিনি দাবি করেন ধৃতরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে । এমনকি যেখানে এই পুরো ঘটনার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল তার সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশ পেয়েছে। ফারহা ও তার গাড়ি চালক ছাড়া বাকিরা আসানসোল ও নিয়ামতপুরের বাসিন্দা বলে জানান ডিসিপি ( পশ্চিম) । তবে মোট দশ অভিযুক্তের মধ্যে আসিফ এবং জাভেদ কুরেশি এখনও পলাতক। খুব শীঘ্রই তাদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে দাবি করেন তিনি।





