নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– জামুরিয়া এবং রানিগঞ্জ শিল্প তালুকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা ও জরিমানা আদায় নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল আসানসোল পুরনিগমকে। সম্প্রতি জামুরিয়া শিল্পতালুকে একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার তরফে আসানসোল পুরনিগমের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়। শুক্রবার সেই মামলার প্রেক্ষিতে, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারক গৌরাঙ্গ কান্ত আসানসোল পুরনিগমের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য ও ভর্ৎসনা করেন। বিচারক প্রশ্ন করেন, নির্মাণ যদি সত্যিই অবৈধ হয়, তাহলে জরিমানা পরিশোধ করলে কি নির্মাণ বৈধ হবে?
প্রসঙ্গত,গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আসানসোল পুরনিগমের জামুরিয়া এবং রানিগঞ্জ শিল্প তালুকে একাধিক বেসরকারি কারখানার বিরুদ্ধে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পুরনিগম নোটিশ পাঠিয়ে সতর্ক করলেও কারখানাগুলি কোনো পদক্ষেপ করেনি। পরবর্তীতে পুরনিগম বেআইনি নির্মাণের জন্য কারখানাগুলির বিরুদ্ধে জরিমানা করে। কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও জরিমানাও পরিশোধ করেনি কারখানাগুলির কর্তৃপক্ষ। এরপর চলতি বছরে মাসখানেক আগে জামুরিয়া শিল্পতালুকে একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার অবৈধ নির্মাণ ভাঙার উদ্যোগ নেয় পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। বুলডোজার নিয়ে অভিযান চালায়। ওই কারখানাকে কোটি টাকারও বেশি জরিমানা করা হয়েছিলো। অভিযান চালানোর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত সময় চেয়ে ক্ষতিপূরণের একটি অংশ (২০লক্ষ) তখনই জমা করলে অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও জরিমানার টাকা জমা দেয়নি ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি তারা কলকাতা হাইকোর্টে আসানসোল পুরনিগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
শুক্রবার মেয়র বিধান উপাধ্যায় গোটা বিষয়টি নিয়ে পুর কমিশনার অদিতি চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন পুরনিগমের আইনী উপদেষ্টা আইনজীবী সুদীপ্ত ঘটক। জানা গেছে আগামী সোমবার মামলার শুনানি রয়েছে। ওই দিন আসানসোল পুরনিগমের আইনজীবী ওই কারখানা সংক্রান্ত সব নথি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের শুনানিতে অংশ নেবেন।
কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনা প্রসঙ্গে মেয়র বিধান উপাধ্যায় এদিন বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে হাইকোর্টের বিচারকের নির্দেশের কথা শুনেছি। আমরা হাইকোর্টের কোন নির্দেশের অর্ডার এদিন পর্যন্ত পাইনি। তাই হাইকোর্টের নির্দেশ সম্পর্কে কোন কিছু বলতে পারবো না।” তবে পাশাপাশি মামলা দায়ের করা বেসরকারি কারখানা প্রসঙ্গে বলেন,”যে কারখানার কথা বলা হচ্ছে, তাদের প্রতিনিধি কিছুদিন আগে আসানসোল পুরনিগমে এসেছিলেন। তারা একদিকে আসানসোল পুরনিগমের সাথে কথা বলছেন এবং অন্যদিকে আদালতে মামলা করছেন। এটা ঠিক না। দুটো তো একসঙ্গে হতে পারে না।”
অন্যদিকে ওই বেসরকারি কারখানার এক আধিকারিক আশুতোষ চৌধুরীকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “পুরো বিষয়টি কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছে।” তিনি দাবি করেন যে, আসানসোল পুরনিগমের সাথে কারখানা কর্তৃপক্ষের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে তারা পারস্পরিক সহযোগিতার সাথে প্রতিটি কাজ করে থাকেন। যদি কোথাও কোনও ভুল বোঝাবুঝি থাকে, তবে তাও সমাধান করা হবে।





