সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শুক্রবার আসানসোল শিল্পাঞ্চলে পালিত হল ‘২৫ শে বৈশাখ’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪ তম জন্মজয়ন্তী।
আসানসোল পুরনিগমের তরফে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়। এই উপলক্ষে এদিন সকালে আসানসোল পুরনিগম থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বেরোয়। ঐতিহ্যবাহী বাঙালি পোশাক পরে বিপুল সংখ্যায় স্কুল পড়ুয়া এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় , দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক, মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত অধিকারী, আসানসোল পুরনিগমের আধিকারিক ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রাটি রবীন্দ্র ভবনে পৌঁছয়। সেখানে রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বিশিষ্টজনেরা। অনুষ্ঠান চলাকালীন বক্তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন ও কর্মের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন।
একইভাবে, এদিন সকালে আসানসোল মহিলা উদ্যোগের পক্ষ থেকে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। এই উপলক্ষে সমাজকর্মী সুদেষ্ণা ঘটক সহ আসানসোল মহিলা উদ্যোগের সকল সদস্য ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সুদেষ্ণা ঘটক বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি সমগ্র ভারতবর্ষ, বিশেষ করে বাংলা এবং সমগ্র বিশ্বে বাঙালিদের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দিয়েছিলেন। যার জন্য আমরা চিরকাল তাঁর কাছে ঋণী থাকব। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে আজকের নতুন প্রজন্ম রবীন্দ্রভবন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর জন্য বর্তমান পরিস্থিতি দায়ী। তবে আমাদের সকলকে চেষ্টা করতে হবে যতদিন আমরা আছি, ততদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের সাথেই থাকুন।”
এদিন মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় জানান, ২৫ শে বৈশাখ উপলক্ষে আসানসোল পুরনিগমের তরফে রবীন্দ্র ভবনে দুদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অন্যদিকে এদিন সকালে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আসানসোল যুব আবাস ম্যারেজ হলে অনুষ্ঠিত হয় “কবি প্রণাম” অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কবির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পোন্নমবলম এস, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সঞ্জয় পাল, পিডি ডিআরডিসি ইন্দ্রদেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোলের মহকুমা শাসক (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য, কালচারাল সেক্রেটারী আসানসোল সংস্কৃতি মঞ্চ, দীপক তলাপাত্র, ভারপ্রাপ্ত জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক, পশ্চিম বর্ধমান নরেন্দ্র নাথ দত্ত এবং জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রাজেশ কুমার মন্ডল। এছাড়াও কবির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ শহরের বিশিষ্ট জনেরা।
অপরদিকে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী পালন করা হয় ইস্পাত নগরী বার্নপুরে। এদিন সকালে আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বার্নপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বেরোয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। তাতে অংশ নেয় একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারা। ছিলেন বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা।
এদিকে বারাবনি ব্লক কার্যালয়ে ২৫ শে বৈশাখ উপলক্ষে কবির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্য দান করা হয়। ছিলেন বারাবনি ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শিলাদিত্য ভট্টাচার্য, বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিং, বারাবনি থানার ওসি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়, বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুফল মাঝি জামগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেশব রাউত। এছাড়া উপস্থিত হয়েছিল দোমহানি শিক্ষা নিকেতন ইংলিশ কোচিং সেন্টারের ছাত্র-ছাত্রীরা। পরে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সঞ্চয়িতা ভবনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়। যেখানে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নাচ, গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করে।
সব মিলিয়ে বাঙালির প্রাণের কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের জন্মদিনে শুক্রবার সকালটা শিল্পাঞ্চল হয়ে উঠল কবিময়। আকাশে-বাতাসে শুধুই ছিল রবি কবির গান কবিতা আবৃত্তি, তাঁর স্মরণ মনন।





