সংবাদদাতা,আসানসোলঃ- রূপনারায়ণপুরের বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা ২০১৭ সালে পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ২০০১ সাল থেকে বন্ধ ছিল উৎপাদন। এই কারখানায় একসময় বিখ্যাত জেলি ফিল্ড কেবল তৈরি হত। যা একসময় ছিল এশিয়া বিখ্যাত। এখন সেখানেই শ্মশানের স্তব্ধতা। ২০১৭ সালের পর
থেকে কারখানা কার্যত আগাছা জঙ্গল আর শ্মশানভূমিতে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই মাঝে মাঝে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এলাকা পরিদর্শন করেছে। আলোর আশা জেগেছে স্থানীয়দের মধ্যে কিন্তু অল্প সময়ের পর তা নিভেও গেছে। সম্প্রতি আবার নতুন দিশা দিয়েছে সিআইএসএফ-এর ডেপুটি কমান্ড্যান্টের পরিদর্শন ঘিরে।
হিন্দুস্তান কেবলসেকে পুনরুজ্জীবিত না করার সিদ্ধান্ত আগেই করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে, ৯৪৭ একরের উপরে অবস্থিত এই বন্ধ শিল্পের জমিতে নতুন কোনও শিল্প গড়ার ভাবনাও নেই কেন্দ্রের । সম্ভবত এই জমি তুলে দেওয়া হবে কেন্দ্রের আধা সামরিক বাহিনীর হাতে। গত মাসে সিআরপিএফ বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিক সহ ডিআইজি নাদিম আহমেদের হিন্দুস্তান কেবলসের এলাকা ঘুরে দেখায় তেমনটাই মনে করছিল স্থানীয় মানুষ। এরই মধ্য গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ)-এর ডেপুটি কমান্ড্যান্ট অশোক ঝাঁ’র পরিদর্শনের পর গতকাল বার্ণপুরের ডিআইজি প্রবোধ চন্দ্রা নিজে এসে জমি ও অবকাঠামোর বিশদ পর্যালোচনা করেন। সূত্রের খবর, সিআইএসএফ এই জমির একটি অংশে অত্যাধুনিক ব্যাটেলিয়ান ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
এদিনের পরিদর্শনে ডিআইজি প্রবোধ চন্দ্রা হিন্দুস্তান কেবলসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক আর.এন. ওঝার সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার গোপন বৈঠকে মিলিত হন। বিকেল চারটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান করে সিআইএসএফ দল। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিআইজি নীরব থাকলেও, তাদের বারংবার আগমন ও গভীর আগ্রহ দেখে স্থানীয়দের ধারণা, এই জমি তাদের পছন্দ হয়েছে। সময় লাগলেও এখানে নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য আধুনিক অবকাঠামো গড়ে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
অন্যদিকে হিন্দুস্তান কেবলস পুনর্বাসন সমিতির সভাপতি সুভাষ মহাজন এই পরিদর্শনের পর নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে আবারও জোরালো সওয়াল তুলেছেন। তিনি বলেন, “নতুন প্রকল্পে স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থান,বন্ধ কারখানার কর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া এবং পুরনো কোয়ার্টার্সে প্রাক্তন কর্মীদের পরিবার বা আগ্রহীদের লিজে দেওয়ার ব্যবস্থা চাই। এই জমি আমাদের অতীতের গর্ব, এর ভবিষ্যৎ গড়তে হবে স্থানীয়দের স্বপ্নকে সম্মান জানিয়ে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সিআইএসএফ ছাড়াও সিআরপিএফ ও একাধিক বেসরকারি শিল্প সংস্থার এই জমির প্রতি আগ্রহের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।





