সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– সরকারি ব্যবস্থাপনায় আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে শুরু হয়েছে তিন দিনের শিশু চলচ্চিত্র উৎসব “ছোটদের ছায়াছবি”। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, শিশু কিশোর অ্যাকাডেমি ও তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ। সহযোগিতায় রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও আসানসোল ফিল্ম অ্যাকাডেমি। আর এই উৎসবের আমন্ত্রণ পত্র ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ওই আমন্ত্রণ পত্রে শাসক দলের মন্ত্রী সাংসদদের নাম থাকলেও নাম নেই শহরের মেয়র ও পুর চেয়ারম্যানের। বিরোধীদের অভিযোগ শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয়টি এবার কাগজে কলমে সামনে চলে এসেছে। যদিও শাসকগোষ্ঠী অন্তর্দ্বন্দ্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত চলতি মাসের ১৭ তারিখ প্রকাশিত “ছোটদের ছায়াছবি”র আমন্ত্রণ পত্র সংবাদ মাধ্যম সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। সেই আমন্ত্রণ পত্রে দেখা যাচ্ছে তিনজন মন্ত্রী মলয় ঘটক, প্রদীপ মজুমদার ও ইন্দ্রনীল সেন, আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি ও পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলমের নাম রয়েছে। কিন্তু সেই আমন্ত্রণ পত্রে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা মহানাগরিক বিধান উপাধ্যায়ের ও চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম নেই।
এই ইস্যুতে গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ তুলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে দুই বিরোধী দল বিজেপি ও কংগ্রেস। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা আর নতুন কি ব্যাপার। মন্ত্রী মলয় ঘটকের উদ্যোগে কোন অনুষ্ঠান হলে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র ও চেয়ারম্যান সহ অন্যদের নাম থাকেনা। আবার একইভাবে আসানসোল পুরনিগমের কোন অনুষ্ঠান হলে মন্ত্রীর নাম থাকেনা। রাজ্যের সরকারটাই তো এই রকম ভাবে চলছে। পুরোটাই গোষ্ঠী কোন্দলে ভরে গেছে। সরকারি অনুষ্ঠানেও তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বাংলার মানুষেরা সব দেখছেন।” অন্যদিকে কংগ্রেস রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি কটাক্ষ করে বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র ও চেয়ারম্যানের নাম ছাপানো হয়নি। এতে স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চলছে। কিন্তু এবার কাগজে কলমে সামনে চলে এসেছে। সোজা কথা, যারা সরকারের তাঁবেদারি করতে পারবে তাদের নাম ছাপা হবে।”
যদিও গোষ্ঠীকোন্দলের কথা অস্বীকার করে বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মতো করে জবাব দিয়েছেন মেয়র ও পুর চেয়ারম্যান। মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি অনুষ্ঠান। তার আমন্ত্রণ পত্রে কার নাম আছে এবং কার নেই তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবো। কারণ এটি সরকারের একটি অনুষ্ঠান।” পাশাপাশি বিরোধীদের তোলা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন,”বিরোধীরা আগে নিজেদের ঘর সামলাক।” পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করে এই উৎসবে যোগ দেবেন বলে জানান।
অন্যদিক জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক নরেন্দ্রনাথ দত্তকে, আসানসোলের মহানাগরিকের নাম কি দেওয়া উচিত ছিলো কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তাহলে অনেকেরই নাম দিতে হতো। আমন্ত্রণ পত্রে খুব অল্প পরিসরে নাম দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী ও অফিসিয়াল লেভেলে নাম লেখা হয়েছে। তাই সবার নাম দেওয়া হয়নি।”





