eaibanglai
Homeএই বাংলায়অবৈধ বালি কারবারের জের! ভেঙে পড়লো পানীয়জল সরবরাহের পাইপলাইন যাওয়ার সেতু

অবৈধ বালি কারবারের জের! ভেঙে পড়লো পানীয়জল সরবরাহের পাইপলাইন যাওয়ার সেতু

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– আসানসোলের বার্নপুরের কালাঝাড়িয়ায় দামোদর নদীর উপরে ভেঙে পড়লো পানীয়জল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার লোহার সেতুটি। যার জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জলসরবরাহের পাইপ লাইন। আসানসোল, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায় পিএইচই বিভাগের জল সরবরাহ আগামী কয়েকদিনে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা।

ঠিক কি করে এই ঘটনাটি ঘটেছে, তা সঠিক জানা না গেলেও দামোদর নদীর উপরে ভেঙে পড়েছে পানীয়জল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার লোহার সেতু বা স্ট্রাকচারাল ব্রিজ। ঘটনায় কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও দুর্ঘটনার সময় পিএইচই বিভাগের এক কর্মী সেখানে আটকে পড়েন। পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ারদের কাছ থেকে ঘটনাটি জানতে পেরে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলম আসানসোলের মহকুমাশাসক (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের একটি দল সেখানে পৌঁছে স্পিডবোটের সাহায্য়ে আটকে পড়া কর্মীকে উদ্ধার করেন।

জানা গেছে, বার্নপুরের কালাঝড়িয়ায় পিএইচইর পাম্প হাউসটি বেশ পুরনো। ৪০ বছর আগে ১৯৮৫ সালে বিবিজে বা বার্ণ বেফোড জেশোফ ( যে সংস্থা হাওড়া ব্রিজ তৈরি করে) পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য এই লোহার স্ট্রাকচারাল ব্রিজ নির্মাণ করে। দামোদর নদীতে সিমেন্টের বিম বা পিলারের উপরে রয়েছে লোহার ব্রিজটি। দামোদর নদীতে রয়েছে জল তোলার জন্য কালেকটার ওয়েল। সেখানে স্ট্রেনার লাগিয়ে দামোদর নদী থেকে জল তুলে পাম্প হাউস থেকে মেন পাইপলাইনে নিয়ে যাওয়ার জন্য নদীর ওপারে একটি লোহার ব্রিজ ব্যবহার করা হয়। তারপর তা রানিগঞ্জের সিয়ারশোল এলাকায় যায়। সেখানে থেকে পরিশ্রুত করে সেই জল বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। এদিন দুপুরে হঠাৎ সেই ব্রিজ মাঝখান থেকে ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় আসানসোল, রানিগঞ্জ সহ বিস্তীর্ণ এলাকার জল সরবরাহ বিঘ্নত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হতে পারেন সাধারণ মানুষ।

অন্যদিকে কীভাবে এই লোহার ব্রিজ ভেঙে পড়ল তা জানা না গেলেও অভিযোগ বেআইনি বালি কারবারিদের দৌরাত্মেই এই ঘটনা ঘটেছে। এদিন বিষয়টি নিয়ে সরব হন রাজ্য বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় ও বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তাঁদের অভিযোগ পিএইচই বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে সেতুর পিলার দুর্বল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় ঘটনায় শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও মন্ত্রীরা কেবল টাকা কামানোর ধান্ধায় ব্যস্ত। তাদের কাছে জনগণের জীবনের কোনও মূল্য নেই। রক্ষণাবেক্ষণের দিকে তাদের কোনও নজর নেই। যার ফলে আজ এই সেতু ভেঙে পড়েছে। এখন আসানসোলের যে এলাকাগুলিতে এখান থেকে জল সরবরাহ হয়, সেখানকার মানুষদেরকে ভয়াবহ সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের এতে কিছু যায়-আসে না।”

যদিও, পিএইচইর তরফে জানানো হয়েছে, যে সব জায়গায় জল সরবরাহ বিঘ্নিত হবে সেইসব জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে ট্যাঙ্কার পাঠিয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হবে। ব্রিজ ও পাইপলাইন মেরামতের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে, তবে তারজন্য বেশকিছু দিন সময় লাগবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments