সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- সতেরো বছরের এক কিশোরের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে সাত ঘন্টা ধরে চলা বিক্ষোভে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল আসানসোল জেলা হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট দুপুরে বারাবনি বিধানসভার আসানসোল উত্তর থানার পাঁচগাছিয়ার বাসিন্দা মঙ্গল হেমব্রমকে পেটে ব্যথা ( প্যানক্রিয়াটাইটিস) এবং চারদিনের জ্বর নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসা করছিলেন ডাঃ বিল্বতোষ মুখোপাধ্যায়। রবিবার সকালে সাড়ে এগারোটা নাগাদ রোগীর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তারা আসানসোল জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ভর্তি থাকাকালীন রোগীর কোন রকম চিকিৎসা করা হয়নি। যে কারণে মঙ্গলের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলের মা জানান তাঁর ছেলে নিজের পায়ে হেঁটে হাসপাতালে এসেছিল। তার পেটে ব্যথা এবং জ্বর হয়েছিল। তবে তার শারীরিক অবস্থা এতোটা খারাপ ছিল না যে দুদিনের মধ্যে সে মারা যাবে। পরিবারের সদস্যদের তরফে দাবি করা হয়, মঙ্গল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলো। সেই ছিলো তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম । এমন পরিস্থিতিতে তার মৃত্যুতে পরিবার বিপন্ন। তাই, ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ ও একজনের চাকরির দাবিতে হাসপাতালে মৃতদেহ দেখে সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় । পরে আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ নস্কর, দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুণ্ডু এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে ছুটে যায়।
এদিকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ চলতে থাকে। হাসপাতালের তরফে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশ মৃতদেহ সেই এ্যাম্বুলেন্সে তোলে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তারা থানায় এফআইআর করার দাবি জানান। সেই দাবি মেনে পুলিশ মৃতদেহ আসানসোল দক্ষিণ থানায় নিয়ে যায় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।





