জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউসগ্রামঃ– আউসগ্রামের বনদপ্তরের কর্মীদের সচেতনতামূলক প্রচার এবং তৎপরতার জন্য সাপের প্রতি আউসগ্রামবাসীর বিদ্বেষ কি ধীরে ধীরে কমছে? বর্তমানে পরিস্থিতি দেখে সেটাই মনে হচ্ছে। জঙ্গল অধ্যুষিত আউসগ্রামের বিভিন্ন জনবসতি এলাকায় প্রায়শই সাপ দেখা যায়। এতদিন সাপকে চরম শত্রু ভেবে নিয়ে তাকে মেরে ফেলাটাই পরম ধর্ম বলে সেখানকার মানুষ মনে করত। গত এক মাস যাবৎ ধরে এলাকাবাসীরা যেন Live & let live মন্ত্রে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। তাইতো আজ আর সাপদের মেরে না ফেলে খবর দেওয়া হচ্ছে বনদপ্তরে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীরা সাপগুলি উদ্ধার করে তাদের নিজস্ব বাসস্থানে ছেড়ে দিচ্ছে।
আউসগ্রাম-২ নং ব্লকের ভালকি অঞ্চলে জল সরবরাহের কাজের জন্য নির্দিষ্ট গুদাম ঘরে আছে বস্তার সারি। অন্যান্য দিনের মত ২৩ শে নভেম্বর সকাল ৮ টা নাগাদ কর্মীরা কাজে গিয়ে বস্তার ফাঁকে বিষাক্ত গুখরো সাপটি দেখতে পায়। সাপটির কোনোরকম ক্ষতি না করে তারা প্রাথমিক আতঙ্ক কাটিয়ে আউসগ্রামের বনদপ্তরে খবর দেয়। খবর পেয়েই বনদপ্তরে দু’জন অভিজ্ঞ স্নেক ক্যাচার সেখানে হাজির হয় এবং সাপটি উদ্ধার করে সেটি গভীর জঙ্গলের মধ্যে ছেড়ে দেয়।
সাপ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আউসগ্রাম বনদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হেমাংশু বাবু খুব খুশি। তিনি বললেন – এভাবেই হয়তো একদিন মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পরিবেশ তার ভারসাম্য ফিরে পাবে। তিনি আরও বললেন – এলাকাটি জঙ্গল অধ্যুষিত। সুতরাং সাপের প্রাদুর্ভাব হবেই। ব্যাঙ বা ইঁদুরের সন্ধানে মাঝে মাঝে সাপ জনবসতি এলাকায় চলে আসতেই পারে। তাদের মেরে না ফেলে যদি আমাদের খবর দেওয়া হয় তাহলে আমরা অবশ্যই সাপটি উদ্ধার করব। তিনি অযথা মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন।
মেদিনীপুরের শখের স্নেক ক্যাচাল অসীম শী বললেন – মানুষের স্বার্থে পরিবেশের জীববৈচিত্র্য বজায় রাখতে হলে সাপ সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। ওরা বাঁচলে আমরাও বাঁচব। দরকার একটু সচেতনতা।