জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, আউসগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান-: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রায় দেড় বছর পর পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন ২০২৬ সালে প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে। দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর নির্দেশে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে শুরু হয়েছে ‘বিজয়া সম্মেলনী’। নির্দেশ মেনে ২০ শে অক্টোবর দলের পক্ষ থেকে আউসগ্রাম-২ নং ব্লকেও আয়োজিত হয়েছে ‘বিজয়া সম্মেলনী’-র।
অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ অসিত মাল আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে পঞ্চাশ সহস্রাধিক ভোটে দলীয় প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের কাছে আহ্বান জানান। একই আহ্বান জানান যুবসমাজের ‘আইকন’ দেবাংশু ভট্টাচার্য্য। উপস্থিত কয়েক হাজার দলীয় কর্মীরা হাততালি দিয়ে তাদের সমর্থন করেন। তবে শুধু জেতানোর আহ্বান জানিয়ে দেবাংশু থেমে থাকেননি, মমতা ব্যানার্জ্জী পরিচালিত তৃণমূল সরকারের একাধিক সাফল্যের তথ্য তিনি শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরেন। সরস ভঙ্গিমায় তিনি দলনেত্রীর চারটি দোষও তুলে ধরেন। শেষে দলীয় কর্মীদের চাপে তিনি তার জনপ্রিয় ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি পরিবেশন করেন। স্বাগত ভাষণ দিতে গিয়ে সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন আউসগ্রাম -২ নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি সেখ লালন। এলাকার মানুষের কাছে তিনি দাতা লালন হিসাবে পরিচিত। তিনি অবশ্য মানবধর্মের প্রতি বেশি জোর দেন। রাজনৈতিক মহলের মতে আরজি করের ঘটনাকে করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দলের পক্ষ থেকে এই আহ্বান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তখন প্রবল হাততালি উপস্থিত তৃণমূল কর্মীরা তাদের বক্তব্যকে সমর্থন করেন। দলীয় কর্মীদের কাছে তারা যখন এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর জন্য আবেদন করছেন তখন মঞ্চে ছিলেন রাজ্য, জেলা, ব্লক থেকে শুরু করে বুথ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এটা এক অসাধারণ দৃশ্য! গেঁড়াই উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এই সম্মেলনীতে উপস্থিত ছিলেন অসিত মাল, শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, রাসবিহারী হালদার, গার্গী নাহা, দেবু টুডু,স্বরাজ ঘোষ, বাগবুল ইসলাম, মমতা বারুই, শান্তা প্রসাদ রায়চৌধুরী, প্রতিটি অঞ্চলের সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান, জেলা পরিষদের সদস্য ও সদস্যারা, হিন্দু, মুসলিম ও সাঁওতালি সমাজের প্রতিনিধি সহ যুব তৃণমূল নেতা সেখ সঞ্জু, দেবাংশু ভট্টাচার্য্য ও স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার সহ অসংখ্য দলীয় কর্মী। ছিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুজিত চট্ট্যোপাধ্যায়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে আগত অতিথিদের বরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে দলের প্রবীণ কর্মীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি হিন্দু, মুসলিম ও সাঁওতালি সমাজের পুরোহিত, ইমাম ও মোয়াজ্জেম এবং মোড়লদের প্রতি সম্মাননা প্রদান করা হয়। বাস্তবে এটি হয়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক। এই প্রথম কোনো রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে এই ধরনের মানুষদের সম্মাননা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে এইদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে বিজেপি ও সিপিএম ছেড়ে বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেন। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব।