eaibanglai
Homeএই বাংলায়বহু কোটি টাকার প্রতারণা কাণ্ডে, ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের’ কর্ণধারদের জামিন নাকচ

বহু কোটি টাকার প্রতারণা কাণ্ডে, ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের’ কর্ণধারদের জামিন নাকচ

নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– বহু কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল একটি ভুয়ো ‘রিয়েল এস্টেট’ বা ‘বিল্ডার্স সংস্থা’র বিরুদ্ধে দুর্গাপুরে। ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ (’99 Builders pvt. ltd’) নামে ওই সংস্থাটির কর্ণধারেরা পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাট বাড়ি নির্মাণ করার নাম করে কোটি কোটি টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তুলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই ওই বিল্ডার সংস্থার কর্ণধারদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে পুলিশী তদন্ত। দুর্গাপুরের ‘অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সাব রেজিস্ট্রার’ বা ‘এডিএসআর’ শান্তনু পালের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সঞ্জীব দে-র নেতৃত্বে শুরু হয়েছে এই বহু কোটি টাকা প্রতারণা মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত।

স্থানীয় একটি সূত্র মারফত জানা গেছে, সরকারি খাস জমি দখল করে প্লটিং করে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তা বিক্রি করে ভুয়ো সংস্থাটি। এভাবে গত কয়েক বছরে নাকি প্রায় ৫০ কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রচুর কাস্টমার নাকি অভিযোগ করেছে- এক জায়গায় প্লট দেখিয়ে অন্য জায়গায় জমি দেওয়ার চেষ্টা করেছে সংস্থাটি, এবং জমি দিতে না পারে সঠিক সময়ে পয়সাও ফেরত দিতে পারেনি ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’।

সুত্র মারফত এও জানা গেছে, দুর্গাপুর ও আসানসোলে ভুয়ো রিয়েল এস্টেট সংস্থা খুলে ফ্যাট বাড়ি নির্মাণ, বিক্রি ও জমি বিক্রির নামে কয়েকশো মানুষকে প্রতারিত করে বহু কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে সংস্থাটি। এমনকি ঝাড়খণ্ডেও এই ভুয়ো সংস্থার ফাঁদ পেতে বহু মানুষকে প্রতারিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এবার এই ভুয়ো সংস্থার বিরুদ্ধে টাকা ডবল করে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা “মানি লন্ডারিনের” (money laundering) আত্মসাৎ ও প্রতারণা করে বহু মানুষকে পথে বসানোর অভিযোগ উঠেছে। এই মর্মে নাকি একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে প্রশাসনের কাছে এবং সেই খবর পৌঁছছে নবান্নের উপর মহলে পর্যন্ত। এরপরই নাকি এই মানি লন্ডারিংয়ের তদন্ত শুরু করেছে রাজ্যের ইকোনমিক অফেন্স উইং (Economic Offences Wing)। ঘটনার পর নানা রকম সূত্র মারফত জানা গেছে আসামীদের বিরুদ্ধে স্পেশাল তদন্ত টিম গঠিত করতে চলেছে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট (ADPC)।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র মারফত আরো জানা গেছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসকের আদেশ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ঘোষ, রাম প্রতাপ সিং ও ইন্দ্রপাল সিং এর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২২ই ডিসেম্বর আগাম জামিনের আবেদন করে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জজ কোটে আবেদন জানায় উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ। কিন্তু পুলিশের বার বার আসামিদের ঢাকা সত্বেও তদন্তের অগ্রগতির জন্য তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক এর কাছে তারা দেখা করেননি বা যায়নি। পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা জজ এই বৃহৎ আকারের দুর্নীতি এবং ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে অভিযুক্তদের আগাম জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। মাননীয় জেলা জজ এদিন দুর্গাপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকদের অবিলম্বে রাম প্রতাপ সিং এবং ইন্দ্রপাল সিংকে পুলিশি রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন বা ডাইরেকশন দেন বলে জানা গেছে।

একটি সূত্র মারফত জানা গেছে, ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক এই কোম্পানিটি এই ধরনের প্রতারণার করার জন্য নাকি আরো অনেক কোম্পানি তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। পুলিশি তদন্তে নাকি উঠে এসেছে মারাত্মক সব তথ্য এই ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থার মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে শিল্পাঞ্চলের সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে উক্ত ওই ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থার কর্ণধারদের না ধরা পড়াকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ বাড়ছে। শিল্পাঞ্চলের অনেকেই প্রশ্ন করছেন, এত বড় গুরুতর অভিযোগের পরও কেন আসামিরা এখনো ধরা পড়ছে না? কাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে তারা গা ঢাকা দিয়ে থাকার সুযোগ পাচ্ছে? অন্যদিকে শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ ‘রাজেশ দে’ নামক এক ব্যক্তি নিজেকে ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ এর দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিয়ে এখনো নাকি সংস্থার বহু অনৈতিক কাজকর্মে চালিয়ে যাচ্ছেন। শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের অনেকেরই প্রশ্ন, কেন অবিলম্বে দুর্গাপুর থানার এই মামলার তদন্তকারী আধিকারিকরা, প্রকাশ্য জনসমক্ষে ‘৯৯ বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ এর ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেওয়া ‘রাজেশ দে’ নামক ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন না?

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments