সংবাদদাতা,বাঁকুড়া:– জায়ে জায়ে সম্পর্ক, সে তো সাপে নেউলে সম্পর্ক। জায়ে জায়ে সম্পর্ক নিয়ে এই ধরাণা একেবারে ধোপে টেকে না বাঁকুড়ার তালডাংরার কদমা গ্রামের পণ্ডা পরিবারের দুই বধূর ক্ষেত্রে। দুজনেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে একই বুথ থেকে লড়ছেন দুই যুযুধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হয়ে। একে অপরের প্রতিপক্ষ। একই ছাদের তলায় থেকে এক হাড়ির ভাত খেয়ে ভোটের জন্য লড়াই চালাচ্ছেন দুজনে ,অথচ সম্পর্কে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। দাবি পদ্মাবতী পণ্ডা ও তার ছোট জা সুপ্রিয়া পণ্ডার।
তালডাংরার হাড়মাসড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৬নম্বর কদমা বুথের প্রার্থী দ্মাবতী ও সুপ্রিয়া। পদ্মাবতী তৃণমূল কংগ্রেস ও সুপ্রিয়া বিজেপির হয়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। পদ্মা আশা কর্মী, সুপ্রিয়া প্রাইভেট টিউশন করেন । সংসারের যাবতীয় কাজ একসাথে সামলে ভিন্ন দলের হয়ে প্রচার সারছেন দুজনেই। কোনো কোন সময় একসাথে বের হচ্ছেন প্রচারে আবার কোন সময় আলাদাভাবে চলছে প্রচার। রাজনীতির ময়দানে লড়াই চললেও বাড়িতে ফিরে চলে আড্ডা, পরিবারের ভাল মন্দ নিয়ে গল্প, দাবি দুই প্রতিপক্ষ জায়ের। তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দুজনেই।
দুই মতাদর্শের দলের হয়ে লড়াইয়ে নেমেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো রাখা কি সম্ভব? দ্মাবতী ও সুপ্রিয়ার মতে পারিবারিক সম্পর্ক ও রাজনীতি দুই ভিন্ন বিষয়। তাই সেভাবে নির্বাচনে লড়াইয়ের প্রভাব পড়েনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে।
বড় জা পদ্মাবতী জানান, ভোট নিজস্ব ব্যাপার, মানুষের যাকে পছন্দ তাকেই ভোট দেবেন, তবে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। প্রচারে বেরোনোর পর সাড়া ভালোই পাচ্ছেন। অন্যদিকে ছোট জা সুপ্রিয়া জানান, প্রচারে বেরিয়ে সবাই চাইছেন তাকেই জয়ী করতে তাই জয়ের ব্যাপারে একশ শতাংশ আশাবাদী।
কিন্তু গ্রামের লোক বিষয়টি কীভাবে দেখছে? গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা আশীষ পণ্ডা জানান, বিষয়টি আমরা ভালো ভাবেই দেখছি । নতুন প্রজন্ম এ সব দেখে শিক্ষা নেবে। যেই জিতুন গ্রামের সার্বিক উন্নয়নে সচেষ্ট হবেন, এটাই আশা। একই সুর দই জায়ের মুখেও। তাদের দাবি ফলাফল যাই হোক সংসারে এতোটুকুও ফাটল ধরবে না। বরং যে জিতবে সে গ্রামের উন্নয়নের চেষ্টা করবে।
