সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– আরজি করের নৃসংশ ও ভয়াবহ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজটাকে। প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন আট থেকে আশি, কলকাতা থেকে প্যারিস। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে শিল্পী সত্তাকেও। এরকমই এক ঘটনা নজরে এসেছে বাকুড়ায়। বাঁকুড়ার ভকতপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ অর্পিতা সরকার আখের ছিবড়ে দিয়ে একটি অতি আকর্ষনীয় মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করেছেন। কিন্তু এখানে মা দুর্গা আর পাঁচটা প্রতিমার মতো নয়। মায়ের প্রতিকৃতিতে ছায়া পড়েছে আর জি কর কাণ্ডের। এখানে মায়ের মূর্তি ডান ও বাম দুটি ভাগে বিভক্ত। ডান ভাগে দেখা যাচ্ছে মায়ের রুদ্র মূর্তি যেখানে দমন করা হচ্ছে মহিষাসুরকে। তবে বামভাগে দেখা যাচ্ছে একজন নির্যাতিতাকে। যার চোখে মুখে ফুটে উঠেছে নির্যাতনের ছাপ। প্রতিকী রূপে বাম ভাগে রয়েছে ছুরি, হ্যান্ডকাফ এবং ফাঁসির দড়ি।
শিল্পী গৃহবধূ অর্পিতা সরকার বলেন, “প্রত্যেক নারীর মধ্যেই মা বাস করছেন। তাই নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে মায়ের পুজো করা হচ্ছে অপরদিকে নির্যাতিত হচ্ছেন মহিলারা। এটা মেনে নেয়া যায় না।”
অর্পিতা জানান হাতে-কলমে কোনোদিন কোনো প্রশিক্ষণ না নিলেও ছোট থেকেই শিল্পকর্মের প্রতি তাঁর প্রবল ঝোঁক। একটু একটু করে মাইক্রো আর্ট থেকে শুরু করে আবস্ট্যাক্ট আর্টের প্রতি ঝুঁকেছেন তিনি। সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের কন্য়া ও স্ত্রী। তাই নিজের শিল্প সত্তাকে ফুটিয়ে তুলতে প্রতিদিনের ব্যাবহারযোগ্য ও অব্যবহারযোগ্য জিনিস পত্রই বেছে নেন বিভিন্ন শিল্প সামগ্রী তৈরি করার জন্য। এর আগে ডোকরার মা দুর্গা, টেরাকোটার ছোট্ট মা দুর্গা, চালের উপরে ওয়ার্ল্ড কাপ এবং পেরেকের মাথায় মা দুর্গা তৈরি করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আর ২০২৪-এ শিল্পের সামগ্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে আখের ছিবড়ে। যা দিয়ে মূর্তি তৈরি করতে খরচ হয়েছে মাত্র ৩০০টাকা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একদিকে যেমন প্রংশা পাচ্ছে মা দুর্গার অপরূপ মূর্তিটি অন্যদিকে তেমনই এক গৃহবধূর এই অভিনব প্রতিবাদের ভাষাকেও স্যালুট জানাচ্ছেন নেট নাগরিকরা।