সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন একটি গ্রাম। সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত নেমেছে, তবুও বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছেন গ্রামের মহিলা থেকে শুরু করে কচিকাঁচা বয়স্করা। ভিড় জমিয়েছেন গ্রামের রাস্তায়। আর প্রত্যেকেই উপভোগ করেছেন পথনাটিকা। আর এই নাটকের মাধ্যমেই তাঁদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে নারী সুরক্ষা, নারী নিরাপত্তাহীনতা এবং নারী স্বাধীনতার মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে সমাজ সংস্কারমূলক নানান গভীর বার্তা।
এভাবেই নাটকের ভাষাকে হাতিয়ার করেই ওঁরা দূর করতে চাইছেন সমাজের অন্দরের কলুষতা। ওঁরা, বাঁকুড়ার চারটি নাট্যদলের ১৮ জন নাট্যকর্মী । সকলে একসঙ্গে মিলে নিয়েছে এই জনকল্যাণকর উদ্যোগ। আর এর জন্য প্রতি রবিবার ওঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন বিভিন্ন গ্রামে। কমপক্ষে গত এক বছর ধরে চলছে এই মহতী উদ্যোগ। এই নাট্য কর্মীরা বিশ্বাস করেন যে প্রতিটা মানুষের একটি নিজস্ব ভাষা রয়েছে। এবং থিয়েটার কর্মীদের ভাষা হল অভিনয়। সেই কারণেই পথে নেমেছেন তারা। কোন মঞ্চে নয়, পথে নেমে একদম সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বার্তা।
থিয়েটার কর্মী সুতোসোম ভাদুরি বলেন, “আমরা থিয়েটারের ভাষা বুঝি, সেই কারণে আমরা উপলব্ধি করেছি যে পথে নামাটা খুব জরুরী। থিয়েটারের ভাষার মাধ্যমে সমাজ সংস্কার করতে চাই। বাঁকুড়া শহরের চারটি নাট্যদল একসঙ্গে সেই কাজই করছি।” থিয়েটার কর্মী পেশায় শিক্ষিকা ঝিনুক দুয়ারী বলেন, “যাদের জন্য এই নাটক তারা অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে দেখেছেন এবং আমাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন। আমরা সারা বছরই কাজ করে নিজের তরফ থেকে সম্পূর্ণ চেষ্টা করছি।”
ইতিহাস সাক্ষী, বরাবর মানব সভ্যতায় প্রতিবাদের ভাষা সংগ্রামের ভাষা এবং পরিবর্তনের ভাষা হিসেবে উঠেছে শিল্প, সাহিত্য এবং অভিনয়। তাই বাঁকুড়ার এই নাট্যকর্মীদের আশা তাঁরাও একদিন এভাবেই নীরবে পরিবর্তন আনতে পারবেন এই ঘুণ ধরে যাওয়া সমাজটায়।