সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বালুচরী শাড়িতে অভিনবত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন বালুচরী শিল্পী অমিতাভ পাল। শিল্পীর নিপুন হাতের স্পর্শে বালুচরী যেন নতুন প্রাণ পেয়েছে। আর শিল্পী তার এই নতুন সৃষ্টি সম্ভারের নাম দিয়েছেন ‘অরুণিমা’। প্রতিটি শাড়ির বুনন যেন কথা বলছে। শিল্পী বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবক্ষয় বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন শাড়ির নকঁসার মাধ্যমে। শাড়ির উপর সুতোর বুননে ফুটে উঠেছে খাঁচায় বন্দী পাখি,সাপ খেলা দেখানো,গাছ কাটা,বাঁদর খেলা দেখান সহ সামাজিক অবক্ষয়ের ছবি। এর পাশাপাশি অরুণিমাতে রঙবেরঙ সুতোর বয়নে শিল্পী ফুটিয়ে তুলেছেন অবলুপ্তির পথে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জীব। যেমন বাজপাখি,বার্তা প্রেরক পায়রা,বনের হরিণ ইত্যাদি। শাড়িগুলির বর্তমান বাজার মূল্য ২০ হাজার টাকা নির্ধারন করা হয়েছে।
বালুচরী শাড়ি মানেই আভিজাত্য। বাঙালি নারীর শাড়ির সম্ভারে বছরের পর বছর ধরে স্বমহিমায় বিরাজমান বালুচরী ৷ নবাবী এই শাড়িগুলি তৈরি করতে সময় লাগে কোনওটির এক মাস, কোনওটি আবার পনেরো দিন । ইতিহাস বলছে বর্তমানে বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী এই শাড়ির জন্মলগ্ন কিন্তু মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ সংলগ্ন বালুচর গ্রামে। অনেক নথি আবার বলছে, জিয়াগঞ্জেরই পূর্বনাম ছিল বালুচর। সেই নাম থেকেই বালুচরী নাম এসেছে ৷ সেই সময় মুর্শাদাবাদের নবাবরা তাঁদের বেগমদের জন্য শাড়ি বানাতেন বালুচরের শিল্পীদের দিয়ে। কালক্রমে গঙ্গাগর্ভে হারিয়ে যায় এই বালুচর গ্রাম ৷ এরপর কালের নিয়মে হারিয়ে যায় বালুচরী শাড়ি। মাঝে পেরিয়ে যায় অনেকটা সময়। দীর্ঘদিন সময় পর কিছু নকশা শুভ ঠাকুরের হাত ধরে বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত কারুকার্য শিল্পী অক্ষয়দাস পাঠরাঙার হাতে আসে ৷ তার পর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের পৃষ্টপোষকতায় বালুচরী শিল্পের নবজাগরণ ঘটে।