সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– সেবাই পরম ধর্ম। এই মহৎ বাণীকে নিজের জীবন চর্চায় ফুটিয়ে তুলেছেন বাঁকুড়ার ছাতনার টোটোচালক মহঃ আলমগীর শেখ। ছাতনার ১ নং অঞ্চলের কুমারগাড়া এলাকার বাসিন্দা মহঃ আলমগীর। সকাল হলেই বেরিয়ে পড়েন দু-মুঠো অন্নের জোগাড়ে। রোজগার বলতে দিনে কখনও ২০০ কি ৩০০ টাকা। কিন্তু সামান্য রোজগার তার সেবা কর্মের কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। টোটো চালানোর পাশাপাশি সমান তালে চলে সমাজ সেবা। দুঃস্থ রোগীদের বিনে পয়সায় হাসপাতালে পৌঁছে দেন ছাতনার এই টোটো চালক।
মহম্মদ আলমগীরের কথায় ছোট থেকেই বাবাকে দেখেছেন দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে। তখন থেকেই মানুষের জন্য কিছু করার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারণে এতদিন তা সম্ভব হয়নি। এখনও যে আর্থিক স্থবিরতা এসেছে তা নয়। তবে পেটের তাগিদে কিছু করার জন্য মাস ছয়েক আগে পারিবারিক কিছু গাছ বিক্রি করে টোটো কেনেন আলমগীর। সেই টোটো চালিয়েই জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করেন। আর তার সঙ্গে সঙ্গে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো রীতিমতো ফেস্টুন তৈরি করে গাড়িতে লাগানোর পাশাপাশি নিজের মোবাইল নম্বর দেওয়া কার্ড দিয়ে মানুষের মধ্যে বিলিও করেছেন। যাতে যে কোনও সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন।
ইতিমধ্যেই তার এই সাধু উদ্যোগ মানুষের নজর কেড়েছে। এলাকার অনেকেই দুঃস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যোগযাগো করছেন আলমগীরের সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে পাচ্ছেন পরিষেবাও। কিন্তু কতদিন এই ভাবে নিজের কাজের সময় নষ্ট করে, আর্থিক ক্ষতি করে রোগীদের বিনা পয়সায় হাসপাতালে পৌঁছে দেবেন? প্রশ্ন শুনে মহঃ আলমগীরের স্পষ্ট জবাব যতদিন টোটো চালানোর ক্ষমতা থাকবে। উল্টে তার দাবি আগামী দিনে আরও বেশী বেশী মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চান তিনি, দিতে চান পরিষেবা।
জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। স্বামী বিবেকানন্দের সেই বাণীই যেন মহঃ আলমগীরের জীবনের মূল মন্ত্র। সেবা করার জন্য আর্থিক প্রাচুর্য নয় বরং একটা পরোপকারী মন দরকার। সেটাই যেন নিজের জীবন দিয়ে প্রমান দিয়ে যাচ্ছেন ছাতনার এই সামান্য অথচ অসামান্য টোটো চালক।