সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়াঃ পারিবারিক বিবাদ যে কতটা মারাত্মক হতে পারে না তা আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা ঘটনা থেকে সহজেই অনুমেয়। বিভিন্ন সময়ে পারিবারিক অশান্তি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে তার ফল মারাত্ম হয়ে ওঠে। এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল বাঁকুড়া জেলা। যে মা সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখায়, যে মায়ের কোলে নিরাপদে, হেসে-খেলে বড় হয় সন্তান সেই মাকেই এবার পারিবারিক অশান্তি থেকে বাঁচতে কেড়ে নিতে হল নিজেরই অধরের সন্তানের জীবন। পারিবারিক অশান্তির জেরে বছর দেড়েকের কন্যা সন্তানকে পুকুরের জলে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠলো এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার তালডাংরা থানা এলাকার যফলা গ্রামে। অভিযুক্ত মহিলা অনিমা মাকুড়ের স্বামী ভরত মাকুড়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাসূত্রে জানা গেছে, বছর কয়েক আগে যফলা গ্রামের ভরত মাকুড়ের সঙ্গে অনিমা মাকুড়ের বিয়ে হয়। তাদের বছর তিনেকের একটি কন্যা সন্তান ও বছর দেড়েকের এক্টিব কন্যা সন্তানও ছিল। অভিযোগ, সোমবার গভীর রাতে অভিযুক্ত অনিমা মাকুড় তার ছোট মেয়ে বছর দেড়েকের বৃষ্টি মাকুড়কে বাড়ির সামনের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। অভিযুক্তের স্বামী ভরত মাকুড় মঙ্গলবার তার স্ত্রীর নামে তালডাংরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ রাতেই তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন ধৃতকে খাতড়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়।প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল একাধিক। দিনের পর দিন কী পারিবারিক অশান্তির মাত্রা বেড়েই চলেছে? এহেন ঘটনা থেকে সহজেই অনুমেয় পারিবারিক অশান্তি কোন মাত্রাই পৌঁছেছে? মায়ের কাছে যে সন্তান সবথেকে বেশি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলে সেই মায়ের সহ্যের সীমা কতদূর অতিক্রম করলে নিজের সন্তানকে এহেন নৃশংসভাবে হত্যা করা সম্ভব? তাহলে কী বর্তমান প্রজন্ম মায়ের কাছেও নিরাপদ নয়? সেই নিপীড়িত, অত্যাচারিত, অসহায় মায়েরাও কি পুলিশ প্রশাসনের ওপর আস্থা হারাচ্ছে?