সংবাদদাতা, বাঁকুড়া:- আজ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কিংবদন্তি চিকিৎসক প্রয়াত বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাঁর অবিস্মরণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্মরণ করতে প্রতি বছর ১ জুলাই দিনটি জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেব পালিত হয়। পাশাপাশি এই দিনে চিকিৎসকদের আবদান তথা সেবাকাজকে কুর্নিশ জানানো হয়। যদিও কোনও একদিন নয় বছরে ৩৬৫ টা দিনই চিকিৎসক দিবস বলে মনে করেন বাঁকুড়ার ‘গরীবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত স্বনামধন্য চিকিৎসক অমিতাভ চট্টরাজ।
কুড়ি বছর চাকরি করার পর স্বেচ্ছাবসর নিয়ে স্বল্প মূল্যে বাঁকুড়ার নতুন চটি এলাকায় রোগী দেখতে শুরু করেন অমিতাভবাবু। মাত্র পাঁচ টাকা ভিজিটে রোগী দেখতে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে অবশ্য সেই ভিজিট পাঁচ টাকা থেকে বেড়ে, দশ টাকা কুড়ি টাকা হয়ে ২০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে রোগীর আর্থিক অবস্থা ভালো না হলে বিনামূল্যেও রোগী দেখেন তিনি। আর তাঁর এই সেবামূলক আচরণের জন্যই এলাকায় ক্রমে তিনি ‘গরীবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিতি পান। প্রায় ৪৪ বছর ধরে ধারাবাহিকতার সঙ্গে স্বল্প মূল্যে রোগী দেখে চলেছেন গরীবের এই ডাক্তার। বাঁকুড়া শহরের নতুন চটিতে প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে ডাক্তারবাবুর চেম্বারে অনেক আশা প্রত্যাশা নিয়ে হাজির হন দূর দূরান্ত থেকে আগত রোগী ও তাদের পরিজনেরা।
প্রসঙ্গত বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলেছে চিকিৎসার খরচও। তার মধ্যে একটু জটিল কোনো রোগ ধরা পড়লে তো কথাই নেই। সেই খরচ এতটাই বেড়ে যায় তা বহন করতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বর্তমান এই পরিস্থিতিতে যারা সল্প মূল্যে অথবা বিনা মূল্যে রোগীদের নিয়মিত পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়ার চিকিৎসক অমিতাভ চট্টরাজ। তাঁকে এলাকার মানুষ ভবগানের স্থান দিয়েছে। যদিও “ডাক্তার কখনও ভগবান হতে পারে না” বলেই মনে করেন অমিতাভবাবু। বরং তাঁর মতে একজন রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকরে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠা দরকার। আর সেটাই চিকিৎসকের সব থেকে বড় প্রাপ্তি। স্থানীয়দের মতে বর্তমান অবক্ষয়ের সময়েও ডাক্তার অমিতাভ চট্টরাজের মতো মানব দরদি ডাক্তারেরা আছেন বলেই মানুষের মধ্যে বিশ্বাস বেঁচে রয়েছে। আজকের জাতীয় চিকিৎসক দিবসে ‘গবীরের ডাক্তার’কে কুর্নিশ জানাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।