eaibanglai
Homeএই বাংলায়যাওয়া হলো না, ভালোবাসায় বাঁধা পড়লেন প্রধান শিক্ষক

যাওয়া হলো না, ভালোবাসায় বাঁধা পড়লেন প্রধান শিক্ষক

সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– পড়ুয়াদের আবদার ফেরাতে পারলেন না। শুধু পড়ুয়া বললে ভুল হবে। পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অভিভাবক ও স্কুলের সহ শিক্ষক শিক্ষিকারও। তাই বদলি নিয়েও যাওয়া হলো না। সকলের ভালোবাসায় বাঁধা পড়ে শিক্ষক জীবনের বাকি সময়টা বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের মাচাতোড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গোস্বামী ।

প্রসঙ্গত ৫৬ বছর বয়সী মনোরঞ্জনবাবু নিজের বাড়ি খাতড়া থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তা প্রতিদিন বাইক চালিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করেন। দীর্ঘ এই যাতায়াত সম্প্রতি কষ্টকর হয়ে ওঠায় বাড়ির কাছে বদলি চেয়ে উৎসশ্রী পোর্টালে আবেদন করেছিলেন তিনি। পুজোর ছুটির মধ্যেই সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শিক্ষা দফতর তাঁকে বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে রানীবাঁধ ব্লকের পুরানপানি হাইস্কুলে বদলির নির্দেশ দেয়। বুধবারই ছিল সেই স্কুলে যাগ দেওয়ার দিন। তার আগে গতকাল পুরানো স্কুলের পরিচালন সমিতিকে ডেকে সমস্ত কিছু বুঝিয়ে বিদায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আর সেই সময়ই স্কুলের সমস্ত পড়ুয়ারা রীতিমতো তাঁকে ঘিরে ধরে বিদ্যালয়ে থেকে যাওয়ার কাতর আবেদন জানায়। পাশে ছিলেন স্কুলের সহ শিক্ষক শিক্ষিকারাও। সমর্থন জানান অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষজনও। সকলের বিশেষত পড়ুয়াদের আবদারে শেষ পর্যন্ত বদলির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন মনোরঞ্জনবাবু। তাই বাড়ির কাছের স্কুলে আর যোগ দেওয়া হয়নি। বুধবারও সেই পুরনো স্কুলে সেই পুরনো মূর্তিতেই দেখা মিলল প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গোস্বামীর।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে দীর্ঘদিন স্কুলে কোনও স্থায়ী প্রধান শিক্ষক ছিল না। ২০১৬ সালে ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন মনোরঞ্জনবাবু। তিনি স্কুলে যোগ দিতেই বদলে যায় পঠন পাঠনের পরিবেশ । তাঁর উদ্যোগেই নিয়মিত ক্লাস , পরীক্ষা , ফলাফল প্রকাশ ছাড়াও স্কুল চত্বরে বাগান তৈরি ও শিক্ষামূলক কর্মকান্ড শুরু হয় । আর এতেই স্কুলের প্রতিটি পড়ুয়া থেকে এলেকার মানুষের মন জয় করে ফেলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

বর্তমান সময়ে যখন ছাত্র শিক্ষক সম্পর্কের অবক্ষয়ের নানা ঘটনা সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে তখন ছাত্র শিক্ষকের গভীর সম্পর্কের নজির হয়ে থাকল বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত এই স্কুল। অন্যদিকে পড়ুয়াদের এই ভালোবাসায় আপ্লুত প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গোস্বামী এই ঘটনাকে তার দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষক জীবনের প্রাপ্তি বলেই মনে করছেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments