সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- চারদিকে ঝোপঝাড়, আগাছা, দেওয়ালে ফাটল, ছাদ চুঁইয়ে পড়ছে বৃষ্টির জল। স্তুপীকৃত প্লাষ্টিকের আবর্জনা, উইয়ের ঢিবি। সব মিলিয়ে ঘা ছমছমে যেন কোনো ভুতুড়ে বাড়ি । কিন্তু এই দৃশ্যপট কোনো ভুতুড়ে বাড়ির নয়, বাড়িটি আসলে বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের দুবরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যার দশা দেখলে যে কেউ ভুতুড়ে বাড়ি বলেই ভুল করবে। অথচ বাঁকুড়া-পশ্চিম মেদিনীপুর সীমান্তের এই সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপরেই নির্ভর করেন ওই দুই জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন হাতিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটির এমন কঙ্কালসার চেহারা ছিলনা। নিয়মিত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা আসতেন। প্রাথমিকভাবে প্রায় সমস্ত পরিকাঠামোই ছিল এখানে। কিন্তু বর্তমানে শুধু জ্বর-সর্দি-কাশীর ওষুধ মেলে। এর বাইরে কিছু হলে সোজা সিমলাপাল ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছুটতে হয় স্থানীয়দের।
হাতিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিকাঠামোগত ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সিমলাপালের বিএমওএইচ ডাঃ রামাশীষ টুডু। তিনি জানান, পুরো বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও এই জীর্ণ পরিষেবা ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নজরে না এলেও বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছেই। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই হালের জন্য শাসক দলকে দায়ী করছে সিপিআইএম। দলের সিমলাপাল এরিয়া কমিটির সদস্য কৌশিক পাইনের দাবি, হাতিবাড়ির মতো একই অবস্থা সিমলাপালের অড়রা আর লক্ষীসাগর হাসপাতালেও। বিগত বাম আমলে গ্রামীণ এলাকার এই হাসপাতাল গুলিতে প্রায় সমস্ত ধরণের স্বাস্থ্য পরিষেবা মিলতো, এখন তার বিন্দুমাত্রও মেলেনা। এমনকি হাসপাতালগুলি মদ্যপদের আড্ডা খানাতে পরিনত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে দুবরাজপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি উদয় শঙ্কর সিংহের দাবি হাতিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তালিকা থেকে বাদ দিলে সার্বিকভাবে জেলা ও রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালের পরিকাঠামো অনেক উন্নত। এই হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। তবে বিগত বাম আমলে এই হাসপাতালে ‘বাঘ সিংহ বাসের পরিস্থিতি ছিল’। এখন পরিস্থিতি অনেক বদলেছে বলে পাল্টা দাবি করেন তিনি।