সংবাদদাতা,বাঁকুড়ঃ- চিকিৎসক থাকলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তার নিয়মিত দেখা মেলে না। তাই রোগীদের রীতিমতো প্রেসক্রিপশন লিখে ওষুধ দেন কর্তব্যরত নার্স। এমনই ভয়ঙ্কর ছবি ধরা পড়েছে বাঁকুড়া জেলার ওন্দা বিধানসভার অন্তর্গত নিকুঞ্জপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। প্রতিবাদে ও উপযুক্ত পরিষেবার দাবিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা।
প্রসঙ্গত নিকুঞ্জপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ১৯৯৪ সালে বাম আমলে ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল। শুধু স্বাস্থ্য কেন্দ্র বললে ভুল হবে তৎকালীন সময়ে গ্রামীণ হাসপাতাল রুপেই গোড়াপত্তন হয়েছিল এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের । সেই সময় এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই গ্রামীন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পেত। এমনকি শল্য চিকিৎসা থেকে শুরু করে, শিশু জন্ম সহ একাধিক পরিষেবা মিলত এই হাসপাতালে। কিন্তু এখন সেসব অতীত। সেই সময়ের গ্রামীণ হাসপাতাল বর্তমানে পরিণত হয়েছে শুধুমাত্র একটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমনটাই জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
অন্যদিকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে এই প্রান্তিক গ্রাম থেকে প্রায় ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে। ফলে
মৈঠ্যা,কদালা, নিকুঞ্জপুর,গামিদ্যা সহ একাধিক গ্রামের একমাত্র লাইফ লাইন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাদের অভিযোগ বর্তমানে এই গ্রামে সরকারি ডাক্তার থাকলেও নিয়মিত তাঁর দেখা মেলে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কোন রোগী যদি জরুরি কালীন চিকিৎসা পরিষেবার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র যান চিকিৎসকের বদলে তাদেরকে ওষুধ পত্র দেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তব্যরত নার্স বুলা হাজরা। আজ কয়েক বছর ধরে এমনই চলে আসছে বলে দাবী গ্রামবাসীদের।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো অবদি চিকিৎসকের থাকার নিয়ম, কিন্তু অভিযোগ সকাল ১১ টা বেজে গেলেও দেখা মেলে না চিকিৎসকের। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন,দৈবক্রমে কোনোদিন চিকিৎসক এলেও এক ঘন্টার বেশি তাঁকে পাওয়া যায় না স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। দীর্ঘদিন ধরে একই ঘটনা চলে আসায় অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে গ্রামবাসীদের। এদিন তারা সমবেত হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এমনকি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়। খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক গৌতম মন্ডল বেশ কয়েক ঘণ্টা পর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছালে গ্রামবাসীরা তাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। যদিও কর্মরত চিকিৎসক দাবি করেন তারা গাড়ি খারাপ হওয়ায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি হয়েছে নয়তো তিনি সময়মতোই আসতেন।