eaibanglai
Homeএই বাংলায়প্রায় ৩২৫ বছরের প্রচীন শীট বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও আনন্দে মেতে ওঠেন কোষ্টিয়া...

প্রায় ৩২৫ বছরের প্রচীন শীট বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও আনন্দে মেতে ওঠেন কোষ্টিয়া গ্রামের মানুষ

শুভ্রাচল চৌধুরী,বাঁকুড়াঃ- মা দুর্গার স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করতেই মেষপালক থেকে একেবারে জমিদার হয়ে ওঠেন বাঁকুড়ার কোষ্টিয়া গ্রামের শীট পরিবারে পূর্বপুরুষ সার্থক শীট। সেই থেকেই চলে আসছে পুজো। কালের প্রভাবে প্রায় ৩২৫ বছরের প্রচীন এই বনেদী বাড়ির পুজো তার জৌলুস খুইছে ঠিকই কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই পুজোয়া আন্তরিকতায় এতটুকু ঘাটতি পড়েনি। সেই প্রচীন রীতিনীতি মেনে আজও এখানে পূজিতা হচ্ছেন মা দুর্গা।

বাঁকুড়ার দু’নম্বর ব্লকের কোষ্টিয়া গ্রাম, সেখানে দু-পাশে সবুজ ধানক্ষেতের মাঝখানে আঁকি-বুকি কাঁচা রাস্তা দিয়ে গ্রামে ঢুকতেই দেখা মিলবে শীট পরিবারের জমিদার বাড়ি। আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা যায় শীট পরিবারের পূর্ব পুরুষ সার্থক শীটের মেশ পালক থেকে জমিদার হয়ে ওঠার রোমাঞ্চকর কাহিনী। জানা যায় বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থেকে এই কোষ্টিয়া গ্রামে মেষ চড়াতে আসতেন সার্থক শীটে। সেই সময় একদিন ক্লান্ত কোষ্টিয়া গ্রাম সংলগ্ন একটি বট গাছের তলায় ঘুমিয়ে পড়েন তিনি এবং মা দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে মা তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করে পুজো করার নির্দেশ দেন। সেই মতো একটি চালা তৈরি করে মা দুর্গার পুজো শুরু করেন সার্থক শীট। শীট পরিবারের দাবি এরপরই সার্থক শীটের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন এই সার্থক শীট। এরপর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে একের পর এক জমিদারি ক্রয় করেন,মালিক হয়ে ওঠেন কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমির। সার্থক শীটের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি আড়ম্বর করে মায়ের পুজো শুরু করেন। জমিদার বাড়ির পাশাপাশি তৈরি হয় মন্দির সহ বিশাল নাট মন্দির। এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট ছিল দিনের বেলা যাত্রাপালা। পরিবার সূত্রে জানা যায় কোষ্টিয়া ও আশেপাশের গ্রামগুলি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় সন্ধ্যে নামার পর থেকেই হাতির উপদ্রব শুরু হতো। তাই দিনের আলো থাকতে থাকতে যাতে সকলে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন তাই এই ব্যবস্থা ছিল। এখন আর যাত্রা না হলেও দশমীর দিন আশেপাশের গ্রামের শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আগে পুজোর কটাদিন এই শীট বাড়ির পুজোকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠতেন তৎকালীন আশেপাশে গ্রামের প্রজারা। প্রজাদের মধ্যে বিতরণ করা হতো ভোগ প্রসাদ। এখন আগের মতো পুজোয় আর জৌলুস না থাকলেও এখনও কোষ্টিয়া গ্রামের মানুষজন এই পুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠেন। রুজির টানে যারা গ্রামের বাইরে থাকেন পুজোর সময় প্রতিবছর তারা গ্রামে ফেরেন শীট বাড়ির পুজোয় অংশ নিতে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments