সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– বে-আইনি দখলদারি তুলতে গিয়ে বন দফতরের আধিকারিকের রাজ্যের মন্ত্রীর রোষে পড়া নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল সেই সময় রানীবাঁধের তৃণমূলের এক হাইপ্রোফাল নেতা দম্পতির বিরুদ্ধে বন দফতরের কোয়ার্টার গুঁড়িয়ে সেই জায়গা প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরির অভিযোগ উঠল।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানীবাঁধ ব্লকের দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত গৌর চন্দ্র টুডু। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক গৌর চন্দ্র টুডু বর্তমানে তৃণমূলের ব্লক সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূলের এস টি শাখার জেলার দায়িত্বেও ছিলেন। গৌর চন্দ্র টুডুর স্ত্রী বিভাবতী টুডুও পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। এবং বাম আমলে দীর্ঘদিন তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা ছিলেন। জেলা পরিষদে পালা বদলের পর তিনি সহ সভাধিপতির দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের শাসক দলের এমন হাই প্রোফাইল দম্পতির বিরুদ্ধেই উঠেছে মারাত্মক অভিযোগ।
জানা গেছে বাঁকুড়া ঝিলিমিলি রাজ্য সড়কের পাশে ছিল বন বিভাগের একটি কোয়ার্টার। স্থানীয়দের অভিযোগ বছর কয়েক আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ওই নেতা দম্পতির নির্দেশে শাবল গাঁইতি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বন দফতরের ওই কোয়ার্টারটি। এমনকি কোয়ার্টার ভাঙার শব্দ যাতে এলাকার মানুষের কানে না পৌঁছয় তার জন্য কোয়ার্টারের সামনে সশব্দে বাজানো হয় ডিজে বক্স। এরপর রাতারাতি ওই জায়গায় একটি প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি করা হয়।
বিরোধী বামেদের দাবী বিষয়টি নিয়ে বারেবারে বন দফতরকে জানানো হলেও অজানা কারনে বন দফতর বিষয়টি নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি। দ্রুত অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বামেরা। অন্যদিকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গৌর চন্দ্র টুডু অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার পাল্টা দাবী কোনো কোয়ার্টার ভাঙা হয়নি। নিজের মালিকানাধীন জায়গায় নিয়ম মেনে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়েই বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। এলাকার নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছে তাদের বিষয়টি জানা নেই। তবে যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তাহলে তিনি যত বড়ই নেতা হোন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। বনদপ্তর অবশ্য অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।