সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ- কার্তিক অমাবস্যায় সারা বাংলা যখন কালীপুজোয় মেতে ওঠে তখন বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের পাটরা রক্ষিত পরিবারের সদস্যরা মেতে উঠেছেন দুর্গাপুজোয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে রক্ষিত পরিবারের রেশম গুটির ব্যবসা ছিল। সেই সময়কারার রক্ষিত পরিবারের এক সদস্য পুরুলিয়ার কোন এক জঙ্গলে গিয়েছিলেন রেশম গুটি তোলার জন্য। সারাদিন রেশম গুটি তোলার পর ক্লান্ত হয়ে গাছের তলাতেই ঘুমিয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি ও মা দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান। সপ্নে মা তাঁকে নির্দেশ দেন কালীপুজোর সন্ধিক্ষণে রক্ষিত পরিবারে তাকে শিব-দুর্গার রূপে প্রতিষ্ঠা করতে। বাড়ি ফিরে পরিবারের সকলকে সেই কথা জানান বর্তমান রক্ষিত পরিবারের সেই পূর্ব পুরুষ এবং মায়ের নির্দেশ মতো কালীপুজোর দিনেই শিব দুর্গার মূর্তি স্থাপন করে তাঁর পুজো শুরু হয়।
রক্ষিত পরিবারের এই ব্যতিক্রমী পুজোয় শিব দুর্গার পাশেই বিরাজমান করেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ। মাকে নিজের ঘরের মেয়ে রূপেই পূজিত করা হয় রক্ষিত পরিবারে । দুর্গাপুজোর রীতি রেওয়াজ মেনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, বিজয় দশমীও করা হয়। পাশাপাশি রক্ষিত পরিবারের আরও একটি ব্যতিক্রমী নিয়ম আছে। পরিবারের কোনও মেয়ে কার্তিক অমবস্যার মায়ের পুজোয় বাড়ি এলে ভাইফোঁটার আগে তিনি আর ফিরতে পারেন না। ভাইফোঁটা সেরেই তাকে ফিরতে হয়। একইভাবে দেবী মাকেও বিজয় দশমী নয় বরং ভাইফোঁটার পরে শুভ দিন দেখে বিদায় জানানো হয়।
সেই পুরনো রীতি রেওয়াজ মেনে আজও রক্ষিত পরিবারে বংশ পরম্পরায় কালীপুজোর দিনেই দেবী দুর্গার পূজা করে আসছেন বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা। বর্তমানে রক্ষিত পরিবার দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পৃথক মন্দির প্রতিষ্ঠা করে আলাদা আলাদা ভাবে দেবী দুর্গার পূজা করেন।।