eaibanglai
Homeএই বাংলায়বাঁকুড়ায় অবৈতনিক কোচিং সেণ্টারের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতিদের সম্বর্ধনা

বাঁকুড়ায় অবৈতনিক কোচিং সেণ্টারের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতিদের সম্বর্ধনা

সৌমী মন্ডল, সারেঙ্গা, বাঁকুড়া:- বর্তমানে দেশের অধিকাংশ কোচিং সেণ্টার যখন শিক্ষার পরিবর্তে ব্যবসাটাকে মূল লক্ষ্য করে তুলেছে তখন বাঁকুড়ার সারেঙ্গার জামিরা পাড়ার অবৈতনিক কোচিং সেণ্টার ‘আলোর দিশা’ প্রকৃত অর্থেই গত এক দশকের বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলেছে এলাকার দুস্থ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। শুধু শিক্ষাদান করেই নিজের দায়িত্ব শেষ নয়, উৎসাহ দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতিদের সম্বর্ধনাও দেওয়াও হয়। সৌজন্যে বিশিষ্ট শিক্ষক তথা সমাজসেবী তনোজ কুমার মন্ডল।

সম্প্রতি একটি ছোট্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকার বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে ‘আলোর দিশা’ কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে এবছর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করার জন্য সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বই, ফাইল ও কলম।

বিনামূল্যে কোচিংয়ের পাশাপাশি সম্বর্ধনা পেয়ে সেণ্টারের ছাত্রী রিমঝিম পাণ্ডা, নীলাবতি মাহাতোরা খুব খুশি। রিমঝিমের বক্তব্য, স্যার না থাকলে ভাল ফল করা তো দূরের কথা হয়তো মাঝপথে পড়াশোনাটা বন্ধ হয়ে যেত। আমাদের মত গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের বিনামূল্যে শিক্ষাদান তো কেউ করবেন না! আবেগে তার কণ্ঠ ধরে আসে। অন্যরাও তার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর গৌতম বুদ্ধ সুরাল, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের প্রাক্তন সংসদ সভাপতি তথা অধ্যাপিকা বসুমিত্রা সিংহ, জেলা গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অরূপ পাল, জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক পীযূষ কান্তি বেরা, জামবনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল মল্লিক, সহকারী শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র মাল, মোটগোদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অঞ্জন মাইতি, তপ্ত দামদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পিন্টু মাইতি, কৃষ্ণপুর গোয়ালডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশিষ্ট শিক্ষক মনোজ মাইতি প্রমুখ। তারা প্রত্যেকেই বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের মত প্রত্যন্ত এলাকায় এই ধরনের একটি কোচিং সেণ্টার চালানোর জন্য তনোজ বাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

প্রসঙ্গত, নিজের বাল্যকালে চরম আর্থিক সঙ্কটে ছিলেন তনোজ বাবু। তখনই তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে তারমত গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের পাশে দাঁড়াবেন। এক্ষেত্রে তিনি পাশে পেয়েছেন তার কয়েকজন বন্ধুকে এবং পরিবারের সদস্যদের।

স্বামীর জন্য গর্বিত তনোজ বাবুর স্ত্রী বললেন, আমি শুনেছি ছোট বয়সে আমার স্বামী তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ছিলেন। তাই আমি চাই আমার স্বামী যেন সর্বদা ওইসব গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের পাশে থাকেন। উনি আমাদের সবার গর্ব।

পাশে থাকার জন্য বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তনোজ বাবুর ছোট্ট প্রতিক্রিয়া, সবার আশার মর্যাদা দিয়ে আমি এইসব ছেলেমেয়েদের পাশে থাকার চেষ্টা করব। পাশাপাশি তিনি অন্যান্যদেরও নিজ নিজ এলাকার গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের পাশে থাকার জন্য আবেদন করেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments