সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ– পৌরসভার নর্দমার নোংরা জলে ডুবেছে চাষ জমি। ফলে বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে ৩০০০ বিঘা চাষযোগ্য জমিতে চাষ করতে পাছেন না চাষীরা। পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে চাষের জমি। অন্যদিকে জমিতে চাষ করতে না পেরে দিনমজুরের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষীরা। অনেকে কাজের খোঁজে পাড়ি দিচ্ছেন অন্যত্র। এমনই ছবি ধরা পড়েছে বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত সানবাঁধা গ্রাম পঞ্চায়েতে।
এমনিতে শুকনো মাটি ও আবহাওয়ার কারণে চাষাবাদের জন্য মোটেও উপযুক্ত নয় বাঁকুড়া জেলা। জেলায় চাষযোগ্য জমির অভাব যথেষ্ট থাকলেও এই সানবাঁধা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাটি বেশ উর্বর ও চাষের উপযোগী। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন এক সময় এই তিন হাজার বিঘা জমিতে ধনা, সরষে ছাড়াও বছরভর নানা ফসল চাষ হতো। সোনালী ধান, হলুদ সরষের জ্যোতিতে ঝলমল করতো গোটা এলাকা। দীর্ঘ দিন ধরে জমিতে চাষ না হওয়ায় সেই জমি আগাছায় ভরে গেছে। কৃষকদের দাবি পুরসভার দুটি নর্দমার জল ঢুকে পড়ছে জমিতে। যার জেরেই পতিত রয়েছে চাষজমি। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েও দীর্ঘ ১৫ বছরে কোনো কাজ হয়নি।
এদিকে পঞ্চায়েতের এবিষয়ে কিছু করার নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সানবাঁধা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান বিদ্যুৎ ঘোষ। তিনি বলেন, “বহু আগেই বিষয়টি আমরা বিডিওকে জানিয়েছি। কিছুই হয়নি। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কিছু করা সম্ভব নয়।”
এখন প্রশ্ন উঠছে দীর্ঘ সময় ধরে কয়েক হাজার জমির চাষ বন্ধ থাকলেও কেন সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না পুরসভা ও স্থানীয় প্রশাসন? যারা সাধারণ মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিয়ে মানুষ তথা সমাজকে বাঁচিয়ে রাখেন তাঁদের এভাবে অবহেলা করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত? বর্তমান সময়ে যখন পৃথিবীর বহু দেশে দেখা দিচ্ছে খাদ্য সংঙ্কট তখন এরাজ্যে চাষযোগ্য জমি পড়ে থাকলেও চাষ করতে পারছেন না বাঁকুড়া জেলার এই চাষীরা। হায় রে পোড়া দেশ!